চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও ধরনের জোট করছে না বাংলাদেশ। সম্প্রতি কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠককে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন না পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তার দাবি, এটি নিয়ে জল্পনা হচ্ছে মূলত দেশ তিনটির নামের কারণে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করার সুযোগ নেই। আলোচনা হচ্ছে মূলত দেশটির তিনটির নামের কারণে। এছাড়া বাকি বিষয় নিয়ে জল্পনার কোনও সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনও জোট গঠন করছি না। মূলত উদ্যোগ চীনের, এটি কর্মকর্তা পর্যায়ে—কোনও রাজনৈতিক পর্যায়ে নয়। সেখানে (কুনমিংয়ে) একটি প্রদর্শনী হচ্ছিল। তখন সেখানে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। আলাপ-আলোচনা পুরোটাই ছিল কানেক্টিভিটি, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি—এ ধরনের বিষয় নিয়ে। সেখানে জোট গঠনের বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। এটি নিতান্তই বাস্তব সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির ব্যাপার। আমার মনে হয় না বিষয়টিকে এর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’
চীন দাবি করছে, ‘ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা’ এবং পাকিস্তান দাবি করেছে ‘ত্রিপক্ষীয় মেকানিজম’। বাংলাদেশ দুটোই অস্বীকার করে কিনা জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আসলে কোনোটাই অস্বীকার করার প্রয়োজন নেই। এর থেকে বোঝা যায়—এটি কোনও কাঠামোগত বিষয় ছিল না। প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি দেখেছে। আমরাও সেটিই করেছি। ভবিষ্যতে যদি কোনও অগ্রগতি হয়, তখন আপনারা জানতে পারবেন। যদি কাঠামোগতভাবে কিছু হয়, তাও সময় মতো জানানো হবে।’
বৈঠকটি ভারতবিরোধী ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই তৃতীয় কোনও পক্ষকে টার্গেট করছি না। অন্য কোনও দেশ যদি এ ধরনের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করতে চায়—তাতে আমি কোনও সমস্যা দেখছি না। ধরুন, তাত্ত্বিকভাবে ভারত যদি চায়—নেপাল, বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে বসুক, কানেক্টিভিটি বা অন্য কিছু নিয়ে। এটা করতে আমি কালকেই রাজি আছি।’
যুক্তরাজ্য সফর
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরের সময় সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক না হওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অফিসিয়াল সফর হিসেবে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বলার পরই আমরা নিশ্চিত করেছি। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক কেন হয়নি, আমি ঠিক এ মুহূর্তে তা বলতে পারবো না। কারণ আমি সেখানে ছিলাম না। যারা ছিলেন তারা হয়তো আরও ভালো বলতে পারবেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে বৈঠকটি হয়নি।’
বৈঠক না হওয়ার দায় কে নেবে, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখি এর দায় কেউ নেয় কিনা। তবে সফরটি ছিল অফিসিয়াল, সেটি বলাও ছিল। প্রত্যাশা ছিল যে বৈঠকটি হবে।’