দেশে সহিংসতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে উদ্বেগ বাড়ছে : আসক

মত ও পথ ডেস্ক

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)
ফাইল ছবি

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে প্রকাশ্যে মা ও দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির সহিংসতা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে উদ্বেগ বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড শুধু আইনের শাসনের পরিপন্থি নয়, এটি নাগরিক নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মুরাদনগরে রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তার ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তারকে (২২) উচ্ছৃঙ্খল একদল মানুষ নিজ বাড়ি থেকে টেনে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরিবারের আরও একজন নারী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রকাশ্যে এমন হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে ন্যায়বিচারের প্রতি মানুষের আস্থা ভেঙে দিচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

আসক-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশে গণপিটুনির ঘটনায় অন্তত ৯৪ জন নিহত হয়েছেন। আসক মনে করে, এ ধরনের সহিংসতা বিচারহীনতার কারণে বাড়ছে এবং সমাজে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার সংস্কৃতি প্রোথিত করছে।

আসক বলেছে, এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, নিরপেক্ষ ও প্রমাণনির্ভর তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে আহত নারীর নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণপিটুনি বা ‘মব সন্ত্রাস’ রাষ্ট্রের ব্যর্থতা এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। সরকারের দায়িত্ব এখনই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে এ ধরনের সহিংসতা রোধ করা এবং স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মাধ্যমে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অন্যথায়, এ সহিংসতার দায় রাষ্ট্রের ওপরই বর্তাবে এবং সমাজে উচ্ছৃঙ্খলতাকে প্রশ্রয় দেবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান এ সহিংসতা রুখতে রাষ্ট্রকে এখনই কার্যকর, কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

শেয়ার করুন