স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের ইন্ধনে মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার: র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড মেম্বার বাচ্চু মিয়ার উস্কানিতে কুমিল্লার মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়িতে মা, ছেলে ও মেয়েসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে র‍্যাব। এই ঘটনায় বাচ্চু মিয়াসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে বাহিনীটি।

শুক্রবার রাতে ঢাকার বনশ্রী ও কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে র‍্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল তাকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন— বাচ্চু মিয়া, রবিউল আওয়াল, আতিকুর রহমান, বায়েজ মাস্টার, দুলাল ও আকাশ।

শনিবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১ জুলাই সকালে গ্রেপ্তার রবিউলের বাড়ি থেকে মোবাইল চুরির অভিযোগে বাঙ্গরা বাজার থানাধীন হায়দরাবাদ এলাকার অটোরিক্সা চালক বোরহানকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একইসঙ্গে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বোরহানের বাবা জসীম উদ্দিন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে তার ছেলের প্রাণভিক্ষা চান। বোরহানের বাড়ি ভুক্তভোগী জোনাকীর শ্বশুরবাড়ির পাশে হওয়ায় তার বাবা জসীম উদ্দিন জোনাকীকে আসামীদের থেকে তার ছেলে উদ্ধারের অনুরোধ জানান। কিন্তু জোনাকী ও তার পরিবারের সদস্যরা আসামীদের কাছ থেকে বোরহানকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে বোরহানের বাবা বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ইতোমধ্যে বোরহানকে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে লোকমুখে খবর প্রকাশিত হলে বোরহানের বাবা ধারণা করেন, আসামীরা তার ছেলেকে মেরে লাশ গুম করে ফেলেছে।

বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দেওয়ার ঘটনায় আসামীরা ধারণা করেন, ভুক্তভোগী জোনাকী ও তার পরিবারের সদস্যদের পরামর্শে বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

এই ঘটনার পর ৩ জুন সকালে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার আসামীরা দলবদ্ধ হয়ে ভিকটিমের বাড়ি ঘেরাও করে। এসময় রোকসানা আক্তার রুবি বাড়ি থেকে বের হলে অভিযুক্তরা তার মাথায় রামদা দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে জোনাকী তার মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে গেলে তাকেও নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মা ও বোনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ভিকটিম রাসেল তৎক্ষণাৎ মোটরসাইকেলে করে তার বাড়ির সামনে আসেন। এসময় আসামীরা তাকেও নির্মমভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এই ঘটনায় রিক্তা ও রুমা নামে দুইজন গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তারা আত্মগোপন রয়েছেন। এই ঘটনার পর ঢাকা ও কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে তারা সকলেই হত্যাকান্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১১ অধিনায়ক বলেন, ‘মূলত মব সৃষ্টিতে ইন্ধন দেন বাচ্চু মিয়া মেম্বার। এসময় ঘটনাস্থলে ইউপি চেয়ারম্যানও ছিল। মূলত তাদের ইন্ধনেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’

শেয়ার করুন