সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারির একটি বক্তব্যের ভিডিও নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ওই বক্তব্যে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আব্দুল বাছিত বড়লেখার ৩টি ইউনিয়নকে ‘পাকিস্তান খ্যাত’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
আব্দুল বাছিতকে বলতে শোনা যায়, ‘…বড়লেখা উপজেলায় পাকিস্তান খ্যাত তিনটি ইউনিয়ন আছে, আমি যা জানি। ১ নম্বর দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়ন, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন এবং দক্ষিণভাগ ইউনিয়ন। আমরা ইনশা আল্লাহ এই তিনটা ইউনিয়নে কমপক্ষে, আমার ধারণা আমরা জিতে গেছি। আলহামদুলিল্লাহ।’
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ জুলাই বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নয়াবাজারে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা-জুড়ী) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলামের সমর্থনে একটি মতবিনিময় সভা হয়। সভায় উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আব্দুল বাছিত বক্তব্য দেন। দীর্ঘ বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি তিনটি ইউনিয়নকে ‘পাকিস্তান খ্যাত’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে জামায়াত নেতা মো. আব্দুল বাছিত বলেন, ৫ জুলাই মাগরিবের নামাজের পর উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের নয়াবাজারে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলামের সমর্থনে একটি মতবিনিময় সভায় তিনি বক্তব্য দেন। তখন প্রসঙ্গক্রমে তিনি কথাগুলো বলেন।
ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় ছাত্রদলের উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন শাখা। শাখা সভাপতি শাহিন আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ছাত্রদল শাহবাজপুর ইউনিয়ন শাখা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছে, মুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত ভূমিকা রাখা সংগঠন জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি সম্প্রতি তাঁদের দলের একটি সভায় উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে পাকিস্তান ঘোষণা করার মতো একটি গর্হিত ও হঠকারী স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। এটি একটি বক্তব্যই নয় শুধু, বরং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’ তাঁরা ওই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যক্তি ও দলকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ছাত্রদল নেতা শাহিন আহমদ বলেন, ‘এই বক্তব্যে এলাকায় মানুষের মনের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক মানুষ আলোচনা-সমালোচনা করছেন। ওই দিন প্রার্থীর (জামায়াত মনোনীত প্রার্থী) পক্ষে মতবিনিময় সভায় এই বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।’