ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হামলায় একদিনে আরও কমপক্ষে ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলার মধ্যেই ইসরায়েলি বর্বর হামলায় তারা নিহত হন।
এর মধ্যে শিশুখাদ্য নেওয়ার লাইনে বোমাবর্ষণ করেছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা উপত্যকায় বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এমন এক সময়ে, যখন গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা চলছে এবং রাফাহতে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে।
নিহতদের মধ্যে ১৫ জন একসঙ্গে নিহত হন মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে শিশুখাদ্য সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়। এদের মধ্যে ৯ জন শিশু ও ৪ জন নারী। এ হামলায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে ১৯ জনই শিশু।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল এই হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে বলেন, “মানুষ যখন বেঁচে থাকার জন্য সাহায্য নিতে যাচ্ছে, তখন তাদের হত্যা করা একেবারেই অমানবিক।”
তিনি আরও বলেন, “গাজায় মাসের পর মাস যথেষ্ট সাহায্য না পৌঁছানোর ফলে এখন শিশুরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এবং দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।”
রাসেল ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন পুরোপুরি মেনে চলার আহ্বান জানান এবং এই হামলার স্বচ্ছ তদন্ত করার দাবি জানান।
এদিকে হামাস এক বিবৃতিতে এই হামলাকে ‘গাজায় গণহত্যার ধারাবাহিক অংশ’ বলে উল্লেখ করেছে। তারা বলেছে, “ইসরায়েল ধারাবাহিকভাবে স্কুল, রাস্তাঘাট, শরণার্থী শিবির ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। এটি একটি পরিকল্পিত জাতিগত নিধনের অংশ, যা বিশ্বের চোখের সামনে ঘটছে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েল হামলা হওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের জবাবে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, অন্তত ৫৭ হাজার ৭৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৬ জন আহত হয়েছেন।