গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী ক্রমাগত মানুষ হত্যা করছে, অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। দখলদার এই বাহিনীর বর্বর কর্মকাণ্ডে পুরো গাজা এক মৃত্যু উপত্যকা হয়ে উঠেছে। ফিলিস্তিনি অঞ্চলটির সর্বত্র মৃত্যু আর ধ্বংসযজ্ঞের স্পষ্ট ছাপ। এই অঞ্চলে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী বিগত পৌনে দুই বছরের বেশি সময় ধরে যে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।
তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭ হাজার ৮২৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, শুক্রবার সন্ধ্যার আগের ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৬১টি মরদেহ আনা হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২৩১ জন। এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮৭। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘অনেক মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছে না।’
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এ নিয়ে ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮৮। আহত হয়েছে ৫ হাজার ১৯৯ জনের বেশি।
গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল আবারও গাজায় হামলা শুরু করে। এরপর থেকে তারা ৭ হাজার ২৬১ জনকে হত্যা করেছে, আহত করেছে আরও ২৫ হাজার ৮৪৬ জনকে। এতে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি ভেঙে পড়ে।
গত বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এ ছাড়া গাজায় যুদ্ধের দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলাও চলছে।