সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত ৩০

মত ও পথ ডেস্ক

সিরিয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সংগৃহীত ছবি

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সুয়েইদা শহরে বেদুইন সুন্নি গোত্র এবং দ্রুজ ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে দাঙ্গায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি।

সোমবার (১৪ জুলাই) ভোরে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৩৭ জন।

সংঘর্ষ থামাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের বাহিনী সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সুয়েইদার সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সেখানে অন্তত ১৫ জনের মরদেহ মর্গে আনা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য পাশের শহর দেরা’য় পাঠানো হয়েছে।

সুয়েইদার গভর্নর মুস্তাফা আল-বাকুর শহরবাসীকে আত্মসংযম প্রদর্শন করে এবং জাতীয় সংস্কারের ডাকের প্রতি সাড়া দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও, দেশটির আধ্যাত্মিক নেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় বিভিন্ন সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ আরও বেড়ে গেছে।

বাশার আল-আসাদের সরকারের পতন হওয়ার পর একটি ইসলামপন্থী সরকার দেশটিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। তবে এখনো পুরো দেশ নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।

গত বছরের শেষ দিকে, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামক সুন্নি ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী দামেস্ক শহরে হামলা চালিয়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে। অবসান হয় আসাদ পরিবারের দীর্ঘ ৫৪ বছরের শাসনামলের।

গত এপ্রিল ও মে মাসে নতুন নিরাপত্তা বাহিনী এবং দ্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত হয়।

দ্রুজ ধর্মের অনুসারীরা লেবানন, জর্ডান ও ইসরায়েলেও রয়েছে। আসাদ শাসনামলে বহু দ্রুজ ধর্মাবলম্বী নীরবে রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত ছিলেন, এই আশায় যে দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে রাষ্ট্র তাদের সুরক্ষা দেবে।

এই মাসের শুরুর দিকে দ্রুজ সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য বিবিসিকে জানান, শারীরিক হামলার আশঙ্কায় নন, বরং তাঁরা নতুন সরকার থেকে সঠিক সুরক্ষা না পাওয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন।

সাম্প্রতিক সময়গুলোতে হামলায় আলাওয়ি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া, দামেস্কের একটি গির্জায় উপাসনাকারীদের ওপরও হামলা হয়েছে।

এদিকে পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। এই মাসে যুক্তরাষ্ট্র হায়াত তাহরির আল-শামকে (এইচটিএস) বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।

একই সময় ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও সিরিয়ায় সফর করেন। ১৪ বছর আগে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর প্রথম কোনো ব্রিটিশ মন্ত্রী হিসেবে দেশটিতে গেলেন।

শেয়ার করুন