জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, স্মৃতি জাদুঘর হবে কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা তো ইতিমধ্যে স্মৃতিতে চলে গেছে—যে রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন-সংগ্রাম করে এত বড় পরিবর্তন ঘটাল, আজকের প্রেক্ষাপটে যদি বিবেচনা করা হয় তাহলে কোথায় বিএনপি, কোথায় জামায়াত, কোথায় এনসিপি, কোথায় অন্যান্য রাজনৈতিক দল।
সম্প্রতি ভয়েস বাংলা ইউটিউব চ্যানেলের এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ঐকমত্য কমিশনে কোন রকমের বৈঠক হচ্ছে, সেই বৈঠকে নানা মতভিন্নতা আছে মতপার্থক্য আছে—ভালো এটা গণতন্ত্রে তো এই মতপার্থক্য থাকবেই। কিন্তু মূল জায়গায় আমরা একটা ভালো নির্বাচন করব। বাংলাদেশে যাতে সুষ্ঠ ভোটের অধিকারটা নিশ্চিত হয়। ভোটের অধিকার হলে যদি কোনো কারণে পাঁচ বছরে মানুষ প্রত্যাশিত সংস্কার না করে, পরিবর্তন যদি না আনে তাহলে যাতে সে সরকার ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে পারে। এইটা ছিল এক নম্বর একটা ইস্যু বা সংস্কার। সেটা আমরা এখনো করতে পেরেছি?
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাস্তায় নামল যে রাজনৈতিক দলগুলো তারা একসময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। এখন তারা পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে—শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে, তারেক রহমানের নামে। আবার এদিক থেকেও পাল্টা বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে এনসিপি—তাদের চিলড্রেন পার্টি বলা হচ্ছে, সেই অভ্যুত্থানের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে আছে, জামায়াতের বিরুদ্ধেও আছে।
তিনি বলেন, আমার জানতে ইচ্ছা করে যে আসলে কি সেই অবস্থায় আমরা আছি, সেই চেতনার মধ্যে আছি কি না—সেটা যদি প্রতিষ্ঠা না করা যায় তাহলে সেই স্মৃতি জাদুঘরে যাবে? ঢাকাতেও তো একটা বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর আছে। কয়জন যায়? কয়জন দর্শনার্থী যায়? তো একসময় দেখা যাবে যে গণভবন স্থাপনাটা এত বিশাল একটা স্থাপনাটা। একটা জাদুঘর করা হলো সত্য। কিন্তু চেতনার অভাবে সেই জাদুঘরটার যে প্রকৃত মর্যাদাটা সেই মর্যাদাটা আর রাজনৈতিক দলগুলো ওন করবে না। অথবা একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে বলতে যদি থাকে তাহলে মানুষ বলবে কিসের চেতনা? কিসের কী? এই জাদুঘরের অর্থটা কী? সুতরাং স্থাপনাটা গড়াটা বড় কথা নয়। বড় বিষয়টা হলো, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেই বিভাজনটা যে অনৈক্য সেই চিন্তা চেতনার একটা ঐক্য সেটা গড়ে তোলা দরকার। সেই কাজটা কিন্তু আসলে হচ্ছে না।
জ্যেষ্ঠ এ সাংবাদিক বলেন, যদি ছাত্ররা এনসিপি না করত তাহলে হয়তো তারা একত্রিত করতে পারত। কিন্তু তারা নিজেরাই একটা দল হয়ে গেল। ছাত্রদের একটা অংশ। অভিভাবক হিসেবে ড. ইউনূস আছেন। এ রকম অবস্থার মধ্যে দ্রুতগতিতে যে লিয়াজোঁ কমিটিকে ডাকবে, ডেকে সবার মধ্যে মতপার্থক্য দূর করবেন। কথাগুলো শুনবেন সেই পরামর্শটাও কিন্তু নাই। ফলে এ রকম একটা হতাশাজনক পরিস্থিতির মধ্যে যখন আগে স্মৃতি জাদুঘরের কথা সামনে আনা হয় তখন খুব বেশি উৎসাহ মনে জাগে না।