রাষ্ট্র নাগরিকের জীবন রক্ষায় ব্যর্থ: আসক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)
ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। তারা বলেছে, নাগরিকের জীবনরক্ষা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব, যা এ ঘটনায় চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির পূর্বঘোষিত সমাবেশে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে। এতে দীপ্ত সাহা, রমজান কাজী, সোহেল মোল্লা ও ইমন নিহত হন। আরও অনেকে আহত হন, যাদের কেউ কেউ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী, শান্তিপূর্ণভাবে মতপ্রকাশ ও সভা করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। অথচ এ ঘটনায় জনগণের সেই অধিকার দমন করা হয়েছে। গুলি চালিয়ে জীবন কেড়ে নেওয়া কোনো সভ্য রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

পুলিশের বক্তব্যে অসংগতি, তদন্ত দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক দাবি করেছেন- পুলিশ কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে গুলির শব্দ ও আগ্নেয়াস্ত্র স্পষ্ট দেখা গেছে। আসকের প্রশ্ন- তাহলে গুলি চালাল কে? এই প্রশ্নের সদুত্তর না পেলে জনমনে বিভ্রান্তি, ভয় এবং প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা আরও বাড়বে বলে আসক মনে করে।

সংগঠনটি সংঘর্ষের ঘটনায় সব পক্ষকে শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসক বলেছে, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে যেন নিরীহ মানুষ হয়রানি বা সহিংসতার শিকার না হন, সে বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে হবে। নতুন করে যেন মানবাধিকার লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত তৈরি না হয়।

আসকের মতে, এই ঘটনায় সরকার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। অবিলম্বে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে চারজন নিহতের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসন্ধান করতে হবে। কারা গুলি চারিয়েছে, হামলা করেছে- তাদের চিহ্নিত করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের গাফিলতিও খতিয়ে দেখতে হবে। সেইসাথে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করাসহ নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা প্রদান করার দাবি জানানো হয়।

শেয়ার করুন