গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সী মারা গেছেন

মত ও পথ ডেস্ক

ঢামেক
ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় রমজান মুন্সী (৩২) নামে গুলিবিদ্ধ আরও এক যুবক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি পেশায় রিকশাচালক ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দিনগত রাত দুইটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০) নামে আরও দুজন বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় এ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হলো। এর আগে গত বুধবার ঘটনার দিনই চারজন নিহত হন। তারা হলেন- মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশের দোকানি সোহেল মোল্লা (৩৫), পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহা (২৫), সিরামিক পণ্যের দোকান কর্মচারী ইমন তালুকদার (১৭) ও রাজমিস্ত্রির সহযোগী রমজান কাজী (১৮)।

রমজান মুন্সীকে ঢামেকে নিয়ে আসা তার ভাই হীরা মুন্সী বলেন, আমার ভাই রিকশাচালক। ঘটনার দিন (বুধবার) দুপুরে গোপালগঞ্জ সদর এলাকায় সিনেমা হলের পাশেই রিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে ফেরার পথে সহিংসতার মধ্যে পড়ে এবং গুলিবিদ্ধ হয়। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিনই রাত দুইটার দিকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসি। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ভাই মারা যায়।

শুক্রবার সকালে ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানিয়েছেন, গোপালগঞ্জ সদর এলাকা থেকে নিয়ে আসা রমজান মুন্সী নামের এক যুবক ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তার মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।

তিনি জানান, গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও দুজন হাসপাতালের ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। তারা হলেন, সুমন বিশ্বাস (৩০) ও আব্বাস আলী (৩০)।

গোপালগঞ্জে কিংস পার্টি হিসেবে তকমা পাওয়া নিবন্ধনহীন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিল বুধবার দুপুরে। সকালেই ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের গাড়িতে আগ্নিসংযোগ এবং ইউএনওর গাড়িতে হামলা করে বলে অভিযোগ উঠে। দুপুরে গোপালগঞ্জের বিক্ষুব্ধ জনতা এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা চালায়। এরপর সমাবেশ শেষে ফেরার পথে এনসিপি নেতাদের বহনকারী গাড়িবহরে হামলা করে তারা। তারপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এক পর্যায়ে এনসিপির শীর্ষ নেতারা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে নিরাপদে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে খুলনায় নেওয়া হয়। এসময় ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।

এদিকে, সংঘাতের সময় গুলিতে নিহত চারজনের দাফন ও শেষকৃত্য গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হয়েছে ময়নাতদন্ত ছাড়াই। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

শেয়ার করুন