অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : মোদি

মত ও পথ ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের বাকি আর প্রায় ১০ মাস। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যটিতে এসে বিজেপি-র হয়ে নির্বাচনি প্রচারাভিযান শুরু করে দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খবর ডয়চে ভেলের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের দুর্গাপুরে কেন্দ্রীয় সরকারের একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও কিছু প্রকল্প চালু করার পর মোদি দলীয় সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, তৃণমূল দেশের সংস্কৃতি ও পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির জন্য বিপদের কারণ। তুষ্টীকরণ করতে গিয়ে তৃণমূল সব সীমা পার করে দিয়েছে। তারা সরাসরি অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষে নেমে পড়েছে। তারা অনুপ্রবেশে উৎসাহ দিচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের জাল নথি বানিয়ে দিচ্ছে। যারা ভারতের সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছে, তৃণমূল তাদের পক্ষে নেমেছে।

মোদি বলেন, যে ভারতের নাগরিক নয়, যে অনুপ্রবেশ করে এসেছে, তার বিরুদ্ধে সংবিধান মেনে ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বিজেপি ও বিজেপিশাসিত রাজ্য বাংলা ও বাঙালির সম্মান করে। বাঙালির অস্মিতাকে সম্মান করে। বাঙালির অস্মিতার সঙ্গে যুক্ত কোনো ষড়যন্ত্রকে বিজেপি সফল হতে দেবে না। এটা নরেন্দ্র মোদির গ্যারান্টি।

এর কয়েক দিন আগে কলকাতায় রাস্তায় পদযাত্রা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই আটক করা হচ্ছে।

তার অভিযোগ ছিল, বিজেপি বাঙালি-বিরোধী, গরিববিরোধী। বাঙালি শ্রমিকদের তারা হেনস্তা করছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, নির্বাচনি প্রচারে এই অভিযোগকে তিনি খুব বড় করে সামনে আনবেন।

এরপরেই রাজ্যে এসে মোদি এই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। তিনি রাজ্যের মানুষের ভয় দূর করার জন্য বাঙালির অস্মিতা রক্ষার গ্যারান্টি দেয়ার কথা বলেছেন। মোদি বলেছেন, শুক্রবার কবি বিষ্ণু দে-র জন্মদিন। মনে রাখা দরকার বিজেপি-ই বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে।

এদিন মোদি কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও করেন। শুক্রবার (১৮ জুলাই) তারও জন্মদিন। তবে সেখান থেকে মোদি চলে যান শিক্ষায় দুর্নীতি, অরাজকতা ও ধর্ষণের প্রসঙ্গে। নাম না করে আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ধর্ষণের প্রসঙ্গ টেনে আনেন।

তিনি বলেন, মেয়েদের বিরুদ্ধে এই ঘটনা মনে আক্রোশের জন্ম দেয়। আর তৃণমূলের নেতারা ল কলেজের ধর্ষণে মেয়েটিকে দুষছেন। এই নির্মমতা দূর করতে গেলে তৃণমূলকে সরাতে হবে। শিক্ষায় নৈরাজ্য় দূর করতে গেলেও তৃণমূলকে সরিয়ে পরিবর্তন করতে হবে।

মোদি বলেছেন, তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলে পশ্চিমবঙ্গে শিল্পে বিনিয়োগ হবে না।

মোদির দাবি, মুর্শিদাবাদের মতো দাঙ্গা যেখানে হয়, যেখানে ছোট বিষয় নিয়ে বড় বিরোধ বাধে, পুলিশ একতরফা ব্যবহার করে, ন্যায় পাওয়ার কোনো আশা নেই, সেখানে কেউ কী করে বিনিয়োগ করবে? যখন মানুষের জীবন ও দোকানের সুরক্ষা হয় না, তখন বিনিয়োগকারীদের চিন্তা হয়। পশ্চিমবঙ্গের যে সম্ভাবনা, তাতে সারা বিশ্ব থেকে বিনিয়োগ আসতে পারে। কিন্তু যেখানে সিন্ডিকেটরাজ চলে, ব্যবসায়ীদের কাছে পয়সা চাওয়া হয়, তাদের ভয় দেখানো হয়, কাজ বন্ধের হুমকি দেওয়া হয়, তখন বিনিয়োগকারীরা ভয়ে চলে যান।

গতকাল মোদি ভাষণে বাংলায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গ বদল চায়, বিকাশ চায়, পরিবর্তন চায়, উন্নয়ন চায়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ডবল ইঞ্জিন সরকার হবে। তারা আশাপূরণ করবে।

শেয়ার করুন