রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে ভিড় করেছেন শিক্ষার্থীদের বাবা, মা ও স্বজনেরা। তাঁরা তাঁদের সন্তানদের খুঁজছেন। কেউ কেউ এখনো সন্তানের খোঁজ পাননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার বেলা দেড়টার কিছু আগে মাইলস্টোন স্কুলের দোতলা ভবনের প্রবেশমুখে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। আহত হয়েছেন অনেকে। তবে সংখ্যা জানা যায়নি। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে একের পর এক অগ্নিদগ্ধকে নেওয়া হচ্ছে।
বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত খবর অনুযায়ী, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ২৮ জনকে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েক জনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে।
ঘটনাস্থলে থাকা লাকি আক্তার নামে একজন অভিভাবক বেলা তিনটার দিকে বলেন, তাঁর দুই সন্তান মাইলস্টোন স্কুলে পড়ে। তিনি বলেন, ‘বড় সন্তানকে বের করতে পেরেছি। ছোটটাকে খুঁজে পাচ্ছি না।’
ফেরদৌসী বেগম নামের আরেক অভিভাবক বলেন, তাঁর মেয়ে ভেতরে আটকা পড়েছে। তিনি তাঁর মেয়ের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না।
ঘটনাস্থলে থাকা মাইলস্টোন কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পরিচয় দেওয়া মো. সবুজ মিয়া বলেন, দোতলা ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। ক্লাস বেলা ১টার দিকে শেষ হয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থী বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তবে অনেকে অভিভাবকদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখনই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং আগুন ধরে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিম হাসান সিয়াম বলেন, প্রজেক্ট-২ ভবনের সামনে বিমানটি পড়েছে। ওই ভবনে দুই তলা মিলিয়ে মোট ১৬টি ক্লাসরুম আছে। আর ৪টি শিক্ষকদের রুম ছিল। প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হতো এই ভবনে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্লাস চলছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লাস শেষ হতো। ঠিক সেই সময় কলেজের প্রজেক্ট-৭ নম্বর ভবনে বিমানটি ধাক্কা লেগে জ্বালানি লিকেজ হয়। পরে প্রজেক্ট-২ ভবনের সামনে আছড়ে পড়ে।