চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ: অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি

সম্পাদকীয়

চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ
চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ। ফাইল ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ১১০টি। এতে ১০০টি ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙেছে এবং ২৯ যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানান খোদ রেলমন্ত্রী। সর্বশেষ ১৫ অক্টোবর রাতে কুমিল্লা সদরে ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের এসি কেবিনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

গত কয়েক বছরে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে; অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাছাড়া পাথর নিক্ষেপের কারণে ট্রেনের গ্লাস তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে এবং রেল ভ্রমণে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। কাজেই এসব ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আইনে তেমন বিধানও রয়েছে। রেলওয়ে আইনের ১২৭ ধারা অনুযায়ী, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা। এছাড়া পাথর নিক্ষেপে কারও মৃত্যু হলে অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডেরও বিধান রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বন্ধ হচ্ছে না পাথর নিক্ষেপ। এর প্রধান কারণ পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় এ আইনে কারও শাস্তি হওয়ার নজির নেই।

এমন ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তৎপর থাকলেও জড়ির ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারছে না রেল মন্ত্রণালয়। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ট্রেনে পাথর ছোড়ার ঘটনায় জড়িত ৮০ ভাগই বস্তির শিশু-কিশোর এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তি। বস্তির শিশুদের আটক করা হলেও প্রমাণের অভাবে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে, পাথর নিক্ষেপ প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইনের আশপাশে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাথর নিক্ষেপকারীদের শনাক্তকরণে বাড়াতে হবে জনপ্রতিনিধি ও সচেতন সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততাও। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশের টহল বাড়াতে হবে। আমরা মনে করি, যে উপায়েই হোক এক্ষেত্রে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই বর্বর কর্মকাণ্ড বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

শেয়ার করুন