সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ব্যাংককে চিকিৎসাধীন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিককে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত কি না সে ব্যাপারে চিকিৎসকরা এখনও কিছু বলেননি।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সকালে মত ও পথকে এ কথা বলেন বিরোধী দলীয় নেতার ছেলে সাদ এরশাদ এমপি। তিনি বর্তমানে মায়ের সঙ্গে ব্যাংককে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। ঢাকা থেকে যে অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল, সেই অবস্থা থেকে আম্মার এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আগের চেয়ে কিছুটা ভালো বলা যায়। বর্তমানে তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত কি না চিকিৎসকরা এখনও কিছু বলেননি।’
উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ব্যাংকক গেছেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। গত ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়। তিনি ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই অবস্থায় দেশে তার মৃত্যুর গুজব রটে যায়।
এর আগে, গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের জানিয়েছিলেন, বার্ধক্যজনিত নানা রোগে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন। তার ব্লাড প্রেসার ও হার্টবিট ভালো আছে কিন্তু নিস্তেজ অবস্থায় আছেন তিনি।
তিনি আরও বলেছিলেন, চিকিৎসকরা ইতিবাচক মতামত দিলে তাকে বিদেশে নেওয়া হবে। চিকিৎসকরা বলেছেন, রওশন এরশাদ মূলত বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গত ১৪ আগস্ট সিএমএইচে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা রওশন এরশাদের ফুসফুসে অস্বাভাবিক মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি পান। তখন তার অক্সিজেন স্যাচুরেশনও কম ছিল। ওই দিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যেখানে ফুসফুসে কার্বন ডাই অক্সাইডের স্বাভাবিক মাত্রা ৫০-৬০ থাকার কথা, সেখানে তার ছিল ২০০’র বেশি।
তবে তার করোনা ও ডেঙ্গু পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। অবস্থার অবনতি হলে ১৬ আগস্ট তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সে সময় বেশ কয়েকদিন তিনি আইসিইউতে ছিলেন। পরে আইসিইউ থেকে গত ২৫ আগস্ট তাকে সিএমএইচের অফিসার্স ফ্যামিলি ওয়ার্ডের ভিভিআইপি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। শারীরিক অবস্থার ফের অবনতি ঘটলে গত ২০ অক্টোবর আবার আইসিইউতে নেওয়া হয় ৭৮ বছর বয়সী এ রাজনীতিককে।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ ময়মনসিংহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি সংসদে গত দুই মেয়াদে বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্বপালন করে আসছেন। এরশাদের মৃত্যুর পর ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ রংপুর-৩ আসন থেকে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।