ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদের’ প্রভাবে রোববার থেকে রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হওয়ায় কাজে বের হওয়া এবং অফিসগামী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। গণপরিবহন সংকট ও কিছু কিছু সড়কে যানজট ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়েছে।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে ছাতা মাথায় গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজার অফিসে যাব কিন্তু বৃষ্টির কারণে বাস পাচ্ছি না। যে দুই-একটা বাস আসছে সেগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই হয়ে আসায় ওঠা যাচ্ছে না। বৃষ্টির কারণে পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতাও সৃষ্টি হয়েছে। শত শত মানুষ ছাতা মাথায় গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছে।
উত্তর বাড্ডা থেকে মিরপুর-১ নম্বরে আসা আরেক বেসরকারি চাকরিজীবী সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, উত্তর বাড্ডায় দীর্ঘসময় অপেক্ষা করে বাসে উঠেছি। কুড়িল, এয়ারপোর্ট রোড, কালশি সব জায়গাতেই অতিরিক্ত যানজট সৃষ্টি হয়েছে বৃষ্টির কারণে। যানজট হলেও গণপরিবহের সংখ্যা অনেক কম। কালশি, মিরপুরসহ বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা দেখেছি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘ট্রাফিক অ্যালার্ট’ নামক জনপ্রিয় একটি গ্রুপে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট এবং বৃষ্টি ভোগান্তি নিয়ে অনেকেই পোস্ট করেছেন। সেখানে নূর আবু জাহিদ নামের একজন একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, খিলক্ষেত ও বিশ্বরোডের মাঝামাঝি এলাকায় গত ২৫ মিনিট ধরে একটুও নড়েনি বাস। অতিরিক্ত যানজট এ সড়কে।
অর্নব জামান নামের একজন পথচারী বলেন, খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া আজ কারও বাইরে বের হওয়া উচিত নয়। রাস্তায় গণপরিবহন তেমন নেই, সেই সঙ্গে অতিরিক্ত যানজট। সকালে আমার মতো যারা কাজে বের হয়েছেন তারা খুব ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ উপকূলে আসার আগেই দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপ হিসেবে এটি সোমবার মধ্যরাতে ভারতের ওডিশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলাদেশ ও ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। মঙ্গলবার থেকে দেশের বেশিরভাগ এলাকার আকাশ পরিষ্কার হতে থাকবে। এছাড়া তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার রয়েছে। দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া বেড়ে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে। সমুদ্রে অবস্থানরত নৌযান ও মাছ ধরার নৌকাগুলোকে উপকূলে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।