সদ্য মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাচ্ছিল্য করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া ও শামসুন নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টার অভিযোগে এই আবেদনটি করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার এই আবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল (এসএম হল) শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুলিয়াস সিজার তালুকদার। তিনি লিখিত অভিযোগের সঙ্গে সিডি ও পেনড্রাইভে মুরাদ হাসানের ভিডিও ক্লিপের একটি কপি এবং ফেসবুক পেজের স্ক্রিনশট যুক্ত করেছেন।
শাহবাগ থানার ওসি জানান, এটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে পাঠানো হবে। তাদের মতামত পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মামলার আবেদনে জুলিয়াস সিজার তালুকদার বলেন, ৫ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে তিনটার সময় তিনি এসএম হলে বসে নাহিদরেইনস পিকচারস নামের একটি ফেসবুক পেজে লাইভ অনুষ্ঠানে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান কর্তৃক বিকৃত যৌনাচার ও বিদ্বেষমূলক একটি ভিডিও ক্লিপ দেখতে পান। সেখানে দেশের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাচ্ছিল্য করেন। ওই ভিডিওতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া ও শামসুন নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টাও করেন তিনি। ওই ন্যক্কারজনক বক্তব্য ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয়েছে।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দুটি মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং বিদ্যাপীঠসমূহের প্রতি তীব্র অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে মধ্যযুগীয় কায়দায় ঘৃণার রাজনীতি করার অপপ্রয়াস দেখিয়েছেন। অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারমূলক বক্তব্য দিয়ে তাদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করে নারীর রাজনীতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের বিরোধিতা প্রকাশ করেন। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নাগরিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধবিরোধী এই ন্যক্কারজনক বক্তব্যকে সামাজিকভাবে মান ক্ষুণ্ন বলে মনে করছি।
সম্প্রতি নানা বেফাঁস মন্তব্যের কারণে আরোচনায় ছিলেন মুরাদ হাসান। এর মধ্যেই একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী মুরাদের কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল ফোনালাপের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে সোমবার তিনি সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে মুরাদকে পদত্যাগের জন্য নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। এদিন বিকালে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকেও মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।