এ বছর শেষ হওয়ার চেয়ে শুরুটা হয়েছিল বেশি ভালো দিয়ে। বিনোদনের জগতে অনেক কিছু ঘটেছে হলিউডে যার মধ্যে কিছু খুবই জঘন্য। এই অদ্ভুত ঘটনাগুলো অনেকদিন মনে বেদনা জাগাবে। যার মধ্যে অন্যতম একটি শুটিং করতে গিয়ে বন্ধুকের আঘাতে একজনের মৃত্যু।
টাইমস আপ ইমপ্লোডেড
এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে যা বিশ্বাস করার মতো না। তারকা-খচিত, রাজনৈতিকভাবে মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন যেটি #মি টু (#MeToo) আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গড়ে উঠেছে, কার্যত রাতারাতি বিস্ফোরিত হয়েছে।
শোরনার শোন্ডা রাইমস, প্রযোজক কেটি ম্যাকগ্রা, অভিনেত্রী ইভা লঙ্গোরিয়াসহ হলিউডের কয়েকজন ব্যক্তিত্বদের নেতৃত্বে ২০১৮ সালে এই গোষ্ঠীর সৃষ্টি। যে কোনো শ্রেণির নারীদের যৌন হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকারদের পক্ষে জনপ্রিয় ও বিখ্যাত নারীদের বলপ্রয়োগের অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী ছিল এটি। কয়েক দশকের মধ্যে নারীদের পক্ষে রাজনীতির বাইরে সবচেয়ে শক্তিশালী আন্দোলনগুলোর মধ্যে #মি টু একটি।
কিন্তু গ্রুপের প্রথম সিইওকে তার ছেলের বিরুদ্ধে অতীতে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ প্রকাশের পর পদত্যাগ করতে হয়েছিল। এই ঘটনা বেশ নাড়া দিয়েছিলো সবখানে।
গোল্ডেন গ্লোব সংস্কারের আহ্বানের কাছে মাথা নত করেছে
আমেরিকায় অস্কার ও গ্র্যামি পুরস্কারের পর সবচেয়ে বেশি দেখা হয় গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। ১৯৪৪ সাল থেকে হলিউড ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (এইচএফপিএ) পুরস্কারটির আয়োজন করে আসছে। কিন্তু এ বছর সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই উঠলো বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য ও বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ।
ফেব্রুয়ারিতে লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০ বছর ধরে এই সংস্থার সদস্যদের মধ্যে একজনও কৃষ্ণাঙ্গ সাংবাদিক নেই, সকলেই শ্বেতাঙ্গ। এরপর থেকেই এইচএফপিএ এর ওপর ক্ষুদ্ধ হলিউডের একটা বড় অংশ। এছাড়া হলিউডের অনেক তারকারাও এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে অনেক টিভি চ্যানেল। ১৯৯৬ সাল থেকে মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘এনবিসি’ গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের আয়োজন সম্প্রচার করে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বিতর্কের জেরে এই টেলিভিশন চ্যানেল ঘোষণা দিয়েছে, ২০২২ সালের গোল্ডেন গ্লোব প্রদান অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে না তারা। এনবিসি আশা করে তারা এইচএফপিএ’র কাছ থেকে অর্থবহ সংস্করণ দেখতে পাবে।
চারদিকের প্রতিবাদে ক্ষমা চেয়েছে হলিউড ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থাটি যত দ্রুত সম্ভব সংস্কারমূলক পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলেও জানিয়েছিল তারা।
পরবর্তীতে নতুন ২১ জন সদস্য যোগ করা সত্ত্বেও ,এটি মোটেও পরিষ্কার নয় যে এইচএফপিএ পরিবর্তিত হয়েছে। যার মধ্যে সাদা ছাড়া অন্য রঙের মানুষও রয়েছে। এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেন দুই সদস্য।
অ্যালেক বাল্ডউইন একটি সেটে কাউকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন
ইন্ডি ওয়েস্টার্ন ‘রাস্ট’ -এর মহড়ার সময় সিনেমাটোগ্রাফার হ্যালিনা হাচিনসকে লাইভ বুলেট দিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিলেন অ্যালেক বাল্ডউইন। যদিও তিনি ইচ্ছা করে এটা করেননি। একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ছিল। যে সত্য এখনও লিখতে কঠিন। বিশ্বাস করা আরও কঠিন।
হাচিন মাটিতে পড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর একজন স্ক্রিপ্ট রাইটার মিচেল ৯১১ অপারেটরে কল দিয়ে সাহায্য চেয়েছিলেন। হলিউড ইন্ডাস্ট্রি এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনা থেকে এখনো বের হতে পারেনি।
২০২১ সালে আরও অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল, যা ছিল অপ্রত্যাশিত। ঘটনাওগুলো হলো-
#Me Too বাতিল হয়ে যাওয়ায় একরকম জট পাকিয়েছিল, যাতে মেরিলিন ম্যানসন এবং আর্মি হ্যামারের মতো তারকারা যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল। তাদের অনেক কাজের প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
শিয়া লাবিউফের বিরুদ্ধে তার প্রাক্তন বান্ধবী টুইগস যৌন নির্যাতনের জন্য মামলা করেছিলেন।
এইচবিও-তে একটি নতুন ‘সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি’ স্পিনঅফ সিরিজ উপস্থিত হওয়ায় ক্রিস নথের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাকে তার সংস্থার পাশাপাশি সিবিএসের ‘দ্য ইকুয়ালাইজার’ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
শ্যারন অসবোর্ন তার কো-হোস্ট শেরিল আন্ডারউডের সাথে বর্ণবাদী বিতর্কে পড়ার পরে ‘দ্য টক’ থেকে বাউন্স হয়েছিলেন। এই সংস্কৃতির সংঘর্ষের গতিবেগ দূর হবে বলে মনে হয় না।