কুষ্টিয়ায় অর্থ সংকটে নির্মিত হয়নি ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল’!

ডেস্ক রিপোর্ট

কয়েক দিনের মধ্যেই কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়কটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে দুইপ্রান্তের গোল চত্বরের নির্মাণ কাজ শেষ করেছে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দেশের উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হবে এই বাইপাস সড়ক।

কিন্তু অর্থ সংকটে কুষ্টিয়া বাইপাসের দুইপ্রান্তের গোল চত্বরে নির্মাণ সম্ভব হয়নি বঙ্গবন্ধুসহ ছয় বিশিষ্ট ব্যক্তির ম্যুরাল। তাই ম্যুরাল বাদ রেখেই বাইপাস সড়কটির উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

জানা গেছে, বাইপাস সড়কের দুইপ্রান্তে ম্যুরাল নির্মাণে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রাণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ। তবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় ম্যুরাল নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে সাত কিলোমিটার সড়কের শতভাগ কাজ শেষ করেছে সড়ক বিভাগ।

নবনির্মিত বাইপাসটি বটতৈল থেকে শুরু হয়ে বারখাদা ত্রিমোহনীতে গিয়ে শেষ হয়েছে। বাইপাসের শুরু ও শেষ প্রান্তে দুইটি গোল চত্বরও নির্মাণ করা হয়েছে। বটতৈল প্রান্তের গোল চত্বরের দুই দিকে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক।

যার একদিক গেছে খুলনা অভিমুখে এবং অপরপ্রান্ত গেছে শহর মুখে। গোল চত্বরের আরেক পাশের আঞ্চলিক মহাসড়ক গেছে চুয়াডাঙ্গার দিকে।

অন্যদিকে বাইপাসের শেষপ্রান্ত বারখাদা গোল চত্বর হতে জাতীয় মহাসড়কটি ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জের দিকে এবং অন্যদিক গেছে কুষ্টিয়া শহর ও বাইপাস অভিমুখে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রাণালয়ে পাঠানো এক পত্রে স্থানীয় সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘সাংস্কৃতিক জনপদ হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধারণ করার পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে বাইপাসের দুইপ্রান্তে নির্মিত গোল চত্বরে ছয় বিশিষ্ট ব্যক্তির প্রতিকৃতি স্থাপন করা প্রয়োজন।’

পত্রে আরো বলা হয়, ‘এই ছয় বিশিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কথা সাহিত্যিক মীর মোশররফ হোসেন, বাউল সম্রাট লালন শাহ ও বৃটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের মহানায়ক ড. রাধা বিনোদ পাল।

এই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি স্থাপনসহ অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য কাজে দুই কোটি টাকা ব্যয় হবে। যা কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়ক প্রকল্পে অন্তভুক্ত না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণ খাত হতে ব্যয়ভার বহন করা প্রয়োজন।

মহান এ ব্যক্তিদের প্রতিকৃতি স্থাপন ও অবকাঠামো নির্মাণে রক্ষণাবেক্ষণ খাত হতে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে অনুরোধ করেছেন তিনি।

ম্যুরালের মূল ডিজাইন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক কনক কান্তি পাঠক এবং স্ট্রাকচার করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল।

তিনি বলেন, ম্যুরালটি যে ডিজাইনে করা হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হলে কুষ্টিয়ার ভাবমূর্তি সারা দেশের কাছে উজ্জল হয়ে উঠবে। কারণ দেশের কোথাও এ ধরনের ম্যুরাল এখনো নির্মিত হয়নি।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, ম্যুরাল নির্মাণ করতে সড়ক বিভাগ থেকে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। এটি সাধারণত জেলা পরিষদ ও পৌরসভা নির্মাণ করে থাকে। আমরা বিষয়টি স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে