এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত মাসের পর এবার টানা দ্বিতীয় মাসে বেসরকারি খাতের এলপিজির (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) দাম এক লাফে বাড়িয়েছে ১২.১৩ শতাংশ। একই সঙ্গে বাড়ানো হয়েছে পরিবহনে ব্যবহৃত এলপিজি-অটোগ্যাসের দামও। গত বৃহস্পতিবার এই মূল্যহার ঘোষণার পরপরই বাজারে এর বিরূপ প্রভাব দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। তাছাড়া, সরকার যে হারে দাম বাড়িয়েছে, এর চেয়ে ব্যবসায়ীরা আরও ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে! প্রশ্ন হচ্ছে, ভোক্তারা সরকার নির্ধারিত দামেও সিলিন্ডার কিনতে পারছেন না কেন?
এলপিজির নতুন মূল্যহার অবশ্যই সাধারণ মানুষের ব্যয়ভার বাড়াবে আরও কয়েক গুণ। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে গৃহস্থালি কাজে এলপিজির ব্যবহার ভোক্তা পর্যায়ে ক্রমেই বাড়ছে। অথচ এলপিজির দাম নির্ধারণে ভোক্তার স্বার্থ প্রাধান্য দেওয়া হয় না। গত বছরের জুলাই থেকে টানা পাঁচ মাস এলপিজির দাম বিশ্ববাজারে বাড়লেও ডিসেম্বরে এই জ্বালানি পণ্যের দাম কমে যায়। তখন যে হারে বিইআরসি দেশে এলপিজির দাম কমিয়েছিল তা-ও প্রশ্নমুক্ত ছিল না। বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেছেন, আগামীতে বিশ্ববাজারে এলপিজির দাম কমলে দেশের বাজারেও কমবে। কিন্তু আমাদের যে নানা তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে তাতে বলা অমূলক হবে না- এমন আশ্বাসে বিশ্বাস রাখা কঠিন।
সামনে পবিত্র রমজান। বাজারে এর তাপ লাগতে শুরু করেছে এখনই। আর এ সময়ে এলপিজির নতুন মূল্যহার নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গে যারা ভোক্তার পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করতে শুরু করেছেন আমরা দেখতে চাইব, সরকারের সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল মহল এর দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিকার নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। একই সঙ্গে এলপিজির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিষয়টিও জনস্বার্থে দ্রুত পুনর্বিবেচনা করা জরুরি। কারণ, সাধারণ মানুষের পক্ষে বাড়তি ব্যয় বহন করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এলপিজির বর্ধিত দাম প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও ভোক্তার ক্রয়সাধ্যের মধ্যে আনা জরুরি।