দুপুরে দেশে আসছে নাবিক হাদিসুরের মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের মরদেহ
নাবিক ও প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের পুরানো ছবির ডান পাশে তার মরদেহের কফিন। সংগৃহীত ছবি

ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের নাবিক ও থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের মরদেহ অবশেষে আজ দুপুরে ঢাকায় আসছে।

বিষয়টি মত ও পথকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. সাখাওয়াত হোসাইন।

তিনি বলেন, আজ (সোমবার) দুপুর ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাদিসুরের মরদেহবাহী তার্কিশ এয়ারের ফ্লাইটটি ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।

এর আগে রোববার রাতে হাদিসুরের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু গত শনিবার রাতে বুখারেস্ট এয়ারপোর্টে প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে প্রায় শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হয়। এর মধ্যে হাদিসুরের মরদেহ বহনকারী তার্কিশ এয়ারের নির্ধারিত ফ্লাইটও বাতিল হয়। পরবর্তী সময়ে ফের শিডিউল ঠিক করে রোববার রাতে বুখারেস্ট ছাড়ে হাদিসুরের মরদেহবাহী ফ্লাইটটি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, তার্কিশ এয়ারের টিকে৭২২ ফ্লাইটটি বুখারেস্ট থেকে প্রথমে ইস্তান্বুল বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ২৩ মিনিটে সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছে ফ্লাইটটি। দুপুর সোয়া ১২টায় শিডিউল থাকলেও সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ মিনিট আগেই ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা কর্পোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।

কিন্তু এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে ওলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। পরবর্তীতে গত বুধবার (২ মার্চ) রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। তবে অন্য জাহাজে থাকা বাকি ২৮ জনকে পরের দিন বৃহস্পতিবার অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিল বিএসসি।

এরপর হাদিসুরের লাশ ও বেঁচে যাওয়া ২৮ নাবিকদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের সহযোগিতায় গত শনিবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুরে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দর সংলগ্ন বাংকার (শেল্টার হাউজ) থেকে বেরিয়ে মালদোভার পথে যাত্রা শুরু করেন ২৮ নাবিক। পরের দিন রোববার ৬ মার্চ বেলা ১১টার দিকে তারা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মালদোভা হয়ে রোমানিয়া পৌঁছান।

গত বুধবার (৯ মার্চ) ২৮ নাবিক রোমানিয়ার বুখারেস্ট বিমানবন্দর থেকে তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় ফেরেন। তন্মধ্যে ১২ নাবিক বুধবার রাতেই নভো এয়ারের একটি লোকাল ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান।

শেয়ার করুন