নাগরিক মহলে বিতর্কের পর মো. আমির হামজাকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। আজ শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
এবার সাহিত্যে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত আমির হামজার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে, এ বিষয়ে গত ১৬ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রচার করে মত ও পথ। এতে বলা হয়, হামজার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেতে পারে ‘জনমত’।
গত মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকা প্রকাশের পরের দিন বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যে মত ও পথ প্রতিবেদনটি প্রচার করে। যা সত্য বলে প্রমাণিত হলো। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল- ‘স্বাধীনতা পদকের তালিকা থেকে বাদ পড়বেন আমির হামজা?’
নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নয় ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে এবার স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ক্ষেত্রসহ পুরস্কারপ্রাপ্তদের নামের তালিকাও প্রকাশ করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। সেখানে সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আমির হামজার নাম আসে। এবার সেই নাম নেই।
পুরস্কার ঘোষণার পরই হামজার নাম নিয়ে নানা বিতর্ক শুরু হয়। নাগরিক মহলে অচেনা আমির হামজার নাম দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন। পরে খবর নিয়ে ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ ও ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তাঁর তিনটি বইয়ের সন্ধান পাওয়ায়।
এরপর বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আহ্বায়ক মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমির হামজার বিষয়ে আসা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে।’ পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগও রয়েছে বলে জানান তিনি।
আমির হামজার জন্মস্থান মাগুরায়। সেখানে তাঁকে ‘চারণ কবি’ হিসেবে চিনতেন অনেকে। তিনি গানের আসরে বসে গান লিখতেন, সঙ্গে সুরও করতেন।
এছাড়া বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, ১৯৭৮ সালে একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আমির হামজা। বিচারিক আদালতের রায়ে ওই মামলায় তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হলেও পরবর্তীতে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ সাধারণ ক্ষমাও পান তিনি।
আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন তিনি।
২০১৯ সালে মারা যাওয়া আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছেলের তৎপরতার কথাও আসে মত ও পথসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।