বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিপীড়ন-দুর্নীতির দায়মুক্তি পাচ্ছে : যুক্তরাষ্ট্র

মত ও পথ ডেস্ক

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন। ছবি : ইন্টারনেট

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিপীড়ন ও দুর্নীতিকে ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি দেওয়ার তথ্য রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর দুর্নীতি, নিপীড়ন ও হত্যার ঘটনাগুলোর তদন্ত এবং বিচারে বাংলাদেশ সরকার অল্প কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।

২০২১ সালের বিশ্ব মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে এসব তথ্য উঠে আসে। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

বাংলাদেশের ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দেশটিতে সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে এবং এখানে অধিকাংশ ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ওপর ন্যস্ত। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ। যদিও বিরোধীদের পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ নানা অনিয়মের কারণে ওই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক বাহিনী, প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনী জাতীয় প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত থাকে। তবে তারা কিছু অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকে। আর সামরিক বাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেসামরিক কর্তৃপক্ষের সক্রিয় নিয়ন্ত্রণে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অসংখ্য নিপীড়নের ঘটনা ঘটিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত যেসব গ্রহণযোগ্য খবর রয়েছে সেগুলো হলো- বেআইনি হত্যাসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড; জোরপূর্বক গুম; সরকারের পক্ষে সরকার বা তার সংস্থার দ্বারা নাগরিকদের ওপর নির্যাতন বা নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অপমানজনক আচরণ; কারাগারে রূঢ় এবং জীবন নাশের হুমকিজনক পরিবেশ; নিবর্তনমূলক গ্রেপ্তার বা আটক; রাজনৈতিক গ্রেপ্তার; অন্য দেশে অবস্থানরত ব্যক্তির ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ; বিচারবিভাগের স্বাধীনতার জন্য বাধা; ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর বেআইনি হস্তক্ষেপ; কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ উঠলে তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তি দেওয়া; বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, যার মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হুমকি, অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার বা বিচারের মুখোমুখি করা; ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ; শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সমিতির স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ, যার মধ্যে রয়েছে সংগঠন, তহবিল বা বেসরকারি সংস্থা ও সুশীল সমাজ সংগঠনের ওপর বিধিনিষেধমূলক আইন, স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিক সংগঠনের স্বাধীনতার ওপর উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ এবং ভয়াবহ ধরনের শিশুশ্রমের উপস্থিতি।

শেয়ার করুন