শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। গত ২৫ ও ২৬ এপ্রিল নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তর পরিদর্শনকালে তিনি এসব বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারি ও মানবিক কার্যাবলির প্রশংসা করেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শান্তিরক্ষা মিশনে সফলভাবে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন তারা। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি শান্তিরক্ষী নিয়োগের আগ্রহের কথাও জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল গিলেজ মিচাউদ, ভারপ্রাপ্ত মিলিটারি অ্যাডভাইজার মেজর জেনারেল মওরিন ও’ব্রায়ান, পলিটিক্যাল ও পিস বিল্ডিং অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল (এএসজি) মোহাম্মদ খালেদ খিয়ারি, অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান স্যান্ডার্স ও পুলিশ অ্যাডভাইজার লুইস রিবেরিও ক্যারিলহোর সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠক হয়েছে।
এসব বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। তাতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের নানা দিক তুলে ধরা হয়।
বৈঠকে সেনাপ্রধান বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের সাংবিধানিক অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে নারী শান্তিরক্ষীসহ আরও অধিক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়োগ, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নেতৃত্বের উচ্চপর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে নিয়োগ, শান্তিরক্ষী পাঠানো অন্যান্য দেশের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ, বাংলাদেশ থেকে আর্মড পার্সোনেল ক্যারিয়ার মোতায়েন, গার্ড ইউনিটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নিয়োগ, জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি এবং অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বাংলাদেশ থেকে আরও বেশিসংখ্যক পুলিশ কন্টিনজেন্ট ও ইন্ডিভিজ্যুয়াল পুলিশ অফিসার (আইপিও) নিয়োগের আহ্বান জানান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের অত্যন্ত কঠোর নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মনোনীত করে উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে মিশনে পাঠানো হয় বলে উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান। জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত মিলিটারি অ্যাডভাইজার বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারি, নৈতিকতা এবং নিয়মানুবর্তিতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এসব কারণেই বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
এএসজি খালেদ খিয়ারি পিস বিল্ডিং কমিশন ও পিসকিপিং-এ বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। এ ছাড়া এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণ এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয়দানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর নামে স্থাপিত বেঞ্চ ও রোপণকৃত বৃক্ষ হানি লুকাস্ট পরিদর্শন করেন সেনাবাহিনীর প্রধান।