ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ৩০ জুলাই

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। আজ সোমবার (৯ মে) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটি ও বিভিন্ন উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাথে জরুরি মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। একইসাথে বিভিন্ন উপজেলা সম্মেলন ও বর্ধিত সভার তারিখও নির্ধারণ করা হয়।

সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে এবং জেলা নেতৃবৃন্দের পরামর্শে তিনি আগামী ১৮ জুন নাসিরনগর উপজেলা, জুনের শেষ সপ্তাহে আশুগঞ্জ উপজেলা, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং ১৯ মে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী দুটি সভায় বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ এলাকার সংসদ সদস্য বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এড.শাহআলম, সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, তাজ মো.ইয়াছিন, মুজিবুর রহমান বাবুল, এড.আবু তাহের, যুগ্ম-সম্পাদক মাহাবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মঈন উদ্দিন মঈন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতন, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এড.শিব শংকর দাস, শিক্ষা সম্পাদক ব্যারিষ্টর জাকির আহমদ, কার্যকরী সদস্য মোর্শেদ কামাল, এড. রাশেদুল কায়সার জীবন সহ বিভিন্ন উপজেলার সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক/যুগ্ম-আহ্বায়কগণ বক্তব্য রাখন।

উদ্বোধনী পর্বটি সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো.মনির হোসেন। এসময় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড.ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী ও সদ্যপ্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ ও জেলা যুবলীগের সাবেক নেতা মেজবাহউদ্দিনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

‘জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে’

জরুরী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন, তিনি তা বাস্তবায়ন করেন। আওয়ামী লীগের তৃণমূলে ভোট বাড়ছে, জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইভিএমে স্বচ্ছ,সুন্দর ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। যেন সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন ও কারচুপির অভিযোগ তুলতে না পারে। কারণ এই নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণায় যেনো দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ না হয়।

তিনি আরও বলেন, তৃণমূলে আমাদের সাংগঠনিক ভিত্তিকে আরও মজবুত করতে হবে। নিজেদের মধ্যে যত সমস্যা আছে তা সাংগঠনিকভাবে সমাধান করতে হবে।

স্বপন বলেন, তৃণমূল থেকে সংগঠনকে শক্তিশালী করবার কাজ চলছে। দলের যারা বিদ্রোহী নির্বাচন করেছেন তাদের আমাদের নেত্রী ক্ষমা করেছেন কি তারা দলে স্বপদে ফিরতে পারবেন না কিংবা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারবেন না। তারা দলের সদস্য থাকবেন।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, ইতোমধ্যে অনেকগুলো উপজেলার সম্মেলন হয়ে গিয়েছে, কিন্তু কয়েকটি উপজেলায় এখনও সম্মেলন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। বাস্তব অসুবিধার কারণেই আমরা নবীনগর, আশুগঞ্জ এবং সরাইল উপজেলা সম্মেলন করতে পারি নাই। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, কোন্দল এগুলোর কারণে আমরা করতে পারি নাই। তারপরও আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নাই, অগ্রগতিও আছে; একেবারে অগ্রগতি নেই, একথাও বলা যাবে না, সেটা নবীনগরেও আছে, আশুগঞ্জে আছে, সরাইলেও আছে।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আমরা মারাত্মক রকমের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছি। আমরা পছন্দ করি অথবা না-ই করি কথাটি সত্য। এটি একেবারেই তৃণমূলের যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব আমাদের আছেন, সেখানকার নেতৃত্বের মনোভঙ্গির জন্য এমনটা হয়েছে, তারাও দীর্ঘদিন যাবৎ আছেন, কেউ ১৭ বছর, কেউ ১৮ বছর এবং তাদেরকে আমরা অসন্তুষ্ট করতে চায়নি, না চাওয়াতে তারা মনে করেছে তারা অপরিহার্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রেক্ষাপটে মনোনয়ন মোকতাদির দিয়েছে, সুতরাং এটার বিরোধিতা করলে কিছু হবে না, কিন্তু মনোনয়ন তো আমি দেই না, এটি দেন শেখ হাসিনা। তৃণমূলের অনেকে নিজেদেরকে অপরিহার্য মনে করায় অনেক জায়গায় আমরা সহযোগিতা পায়নি এবং তৃণমূলে ব্যপকভাবে বিদ্রোহ হয়েছে, এই বিদ্রোহের কারণে আমরা পরাজয় বরণ করেছি। সুতরাং তৃণমূলের কর্মকাণ্ডকে সুদৃঢ় করার জন্য নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর আমি পক্ষপাতি। তাছাড়া আমাদের সামনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন, এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনটি হলো জাতীয় নির্বাচন, যেটি হতে আর দেড় বছর বাকি, এমতাবস্থায় তৃণমূলকে শক্তিশালী না করা হলে আমরা সেই নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা কঠিন হবে।

শেয়ার করুন