ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত নয়টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আগামী সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে সম্পাদক পরিষদ। মানববন্ধনে শুধু পরিষদের সদস্যরাই অংশ নেবেন। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদের এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, করতোয়া সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, যুগান্তর-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকাল-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন সম্পাদক পরিষদের সদস্য ‘ভোরের কাগজ’ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আগামী সোমবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবে সম্পাদক পরিষদ। মানববন্ধনে শুধু সম্পাদক পরিষদের সদস্যরাই অংশগ্রহণ করবেন।
সম্পাদক পরিষদের এই মানববন্ধন কর্মসূচি গত ২৯ সেপ্টেম্বর পালনের কথা থাকলেও সে সময় এই কর্মসূচি স্থগিত করে সম্পাদক পরিষদকে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। পরে সম্পাদক পরিষদের বক্তব্য শুনতে তথ্যমন্ত্রীসহ সরকারের তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সে সময় সরকারের তিন মন্ত্রীর পক্ষ প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল— ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হবে এবং মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে এ নিয়ে আরও আলোচনা করা হবে। কিন্তু মন্ত্রিসভার সর্বশেষ দুটি বৈঠকে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এ বিষয়টিকে সম্পাদক পরিষদ ‘প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ’ বলে মনে করে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে শ্যামল দত্ত বলেন, সম্পাদক পরিষদ স্থগিত মানববন্ধন কর্মসূচিটি ১৫ অক্টোবর পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ‘ডেইলি স্টার’ সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আইনটি আমরা বাতিল চাইনি। কতগুলো বিশেষ ধারার আমূল পরিবর্তন চেয়েছি। এই পরিবর্তন সম্ভব। আমরা আশা করবো— ওই সব ধারাগুলো সংশোধন করে আইনটি সংশোধন করা হবে।’
উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ। বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে এই ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।