শোকের মাস আগস্টে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শোকার্ত মানুষের ঢল নেমেছে। জাতীয় শোক দিবস যতোই এগিয়ে আসছে, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে মানুষের ভিড় ততোই বড়ছে। বিশেষ করে, ছুটির দিলগুলোতে বুকে শোকের চিহৃ কালো ব্যাজ ধারণ করে হাজারো মানুষ আসছেন টুঙ্গিপাড়ায়।
তারা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য শোকাশ্রুপাত করছেন।
পদ্মা সেতু চালুর পর এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। এ কারণে প্রতিদিনই পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষ টুঙ্গিপাড়া আসছেন। এ ছাড়া রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষ টুঙ্গিপাড়া এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শোকাবহ আগস্টের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা নওয়াব আলি বলেন, শোকের মাসের প্রথমদিন থেকেই মন্ত্রী, এমপি, সচিব, পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী সংগঠন এবং বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ টুঙ্গিপাড়া আসছেন। প্রতিদিন গড়ে ১শ’ সংগঠন এখানে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। ফুলে ফুলে ছেয়ে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ। পদ্মা সেতু চালুর পর এ বছর শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে মানুষের সমাগম বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শোকার্ত মানুষের অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধায় এখানে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতা শেখ সায়েরা খাতুন। তিনি ছিলেন বাবা-মায়ের প্রিয় খোকা। ছোট বেলা থেকেই তিনি শোষিত নির্যাতিত মানুষের জন্য কাজ শুরু করেন। তিনি নিজেকে নিয়ে কখনও চিন্তা করেননি। মানুষের অধিকার আদায়ে সারাজীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তাঁকে জেল, জুলুম, হুলিয়া ও শাসক গোষ্ঠীর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আপসহীন খোকা সবার প্রিয় মুজিব ভাই থেকে বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে প্রত্যন্ত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায় তাঁকে কবর দিয়েছিলো। তারা ভেবেছিল, এ নিভৃতপল্লিতে কেউ বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত করতে আসবেন না। তাদের সেই উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছেন। এ সমাধিসৌধ টুঙ্গিপাড়াকে নবআলোকে উদ্ভাসিত করেছে। বঙ্গবন্ধুর মহিমায় টুঙ্গিপাড়া জেগেছে।