মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি ছিলেন বর্ণচোরা মুক্তিযোদ্ধা। ওয়ার কাউন্সিল গঠন করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। যারা ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিলেন, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া ১৯৭৭ সালে প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের গুম ও খুন করেছেন মন্তব্য করে তার মরণোত্তর বিচার দাবি করেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘১৯৭৭ সালে খুনি জিয়ার সামরিক ষড়যন্ত্রের শিকার আমরা’ শীর্ষক ব্যানারে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়ার কবর অপসারণ, ১৯৭৭ সালে ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণা করা এবং প্রত্যেককে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কে পদোন্নতি দেখিয়ে সকল সুযোগ সুবিধা প্রদানের দাবি জানানো হয়।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর প্রহসনের বিচারের নামে ১১০০ জনের বেশি সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। আরও কয়েক হাজার সদস্যকে গুম করা হয়েছে। তারা প্রায় সকলেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রহসনের বিচারে কৌশলে তাদের খুন ও গুম করেছে জিয়া। কমিশন গঠন করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা উচিত।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে মরণোত্তর বিচারের নজির আছে। বহু দেশে মরণোত্তর বিচার হয়েছে। সাজা না পেলেও ইতিহাসে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে অনেকেই। খুনি জিয়া ও তার সহযোগীদের মরণোত্তর বিচার দাবি হোক। এটা কোনো বেআইনি হবে না। কী ঘটেছে সেটার সত্য উদঘাটন করাও আইনের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকে জিয়ার মরণোত্তর বিচার হওয়া বাঞ্ছনীয় ও জরুরি। কমিশন গঠন করে এই হত্যার বিচার করতে হবে।
আলোচনা সভায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, জিয়াউর রহমানের মতো একজন হৃদয়হীন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিগত সময়ে যদি কাউকে তৈমুর লঙ, চেঙ্গিস খান, নাদির শাহ উপাধি দিতে হয়, তাহলে খুনি জিয়াকে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা এবং ১৯৭৭ সালের হত্যাকাণ্ডের মূল নেতৃত্বে ছিল খুনি জিয়াউর রহমান। মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়ার অবস্থান হয়েছে মীর জাফরের পাশে। যুদ্ধেও তিনি পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করেছেন।