আজকের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে সতর্ক বাংলাদেশ

ক্রীড়া ডেস্ক

জিম্বাবুয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও দুই টেস্ট সিরিজ খেলতে এখন বাংলাদেশ সফরে। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি আজ শুরু হচ্ছে। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দিবারাত্রির ম্যাচটি শুরু হবে বেলা আড়াইটায়।

সর্বশেষ এই দুই দলের সাক্ষাৎ হয়েছিল গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে। এই মিরপুরের মাঠে অনুষ্ঠিত ওই টুর্নামেন্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় পায় বাংলাদেশ। তবুও আজ সতর্ক বাংলাদেশ।ক্রিকেট বলে কথা!

এখন পর্যন্ত এই দুই দল পরস্পরের বিপক্ষে যে কয়টি ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে, তাতে চলমান সিরিজে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখাই যায়। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি অবশ্য একই সঙ্গে সতর্ক থাকতে চান।

জিম্বাবুয়ের প্রতি সতর্ক থাকার আর একটি কারণ ওদের প্রায় সব সিনিয়র খেলোয়াড় দলে ফিরেছে। এ ছাড়া ব্জিম্বাবুয়ে দলের সবচেয়ে ভালো রেকর্ড বাংলাদেশেই। তাই মাশরাফির মতে, সফরকারীদের বিপক্ষে জিততে হলে ১০০ ভাগ দিয়ে খেলতে হবে স্বাগতিকদের।

এ ছাড়া মিরপুরের উইকেট নিয়ে আছে শঙ্কা। গত কয়েকটি টুর্নামেন্টে এক অনিশ্চিত উইকেট দেখা গেছে এই মাঠে। সকালের উইকেটে রান করা কষ্টকর ছিল, সেখানেই বিকেলে রানের ফুলঝুরির দেখা মেলে।

গতকাল শনিবার মিরপুরে বিসিবি মিডিয়া সেন্টারে ম্যাচ-পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সে কথা খোলাখুলি বলেছেন।

টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, চ্যালেঞ্জটা প্রতি ম্যাচে যেটা থাকে সেটাই। সবার প্রত্যাশা, আমরা জিতব এবং জেতার আশাই করছে সবাই। সেটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, অন্য দলের সঙ্গে যেই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে খেলেছি, গত এশিয়া কাপে যেভাবে খেলেছি, সেটাই থাকবে।

গত ১৫ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ শেষে দেশে ফিরে এক মাসের মধ্যেই হোম সিরিজ খেলতে নামছে লাল-সবুজরা। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দল ফাইনাল খেলে ভারতের বিপক্ষে। চরম নাটকীয়তায় ভরা ওই ম্যাচে বাংলাদেশ হারে শেষ বলে।

ওই সিরিজ থেকেই আহত হয়ে আছেন বাংলাদেশ দলের দুই প্রধান সেনানি তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। তাদের ছাড়াই নামছে বাংলাদেশ দল।

টাইগার অধিনায়ক বলেন, এশিয়া কাপে দলের ওপর দিয়ে অনেক অনিশ্চয়তা গেছে। এক এক ম্যাচে এক একজন করে অসুস্থ হচ্ছিল। দুজন তো টিম দলে বের হয়ে গিয়েছিল। এখন আমরা জানি ওই দুজন খেলবে না। রুবেল হাসপাতালে ছিল, এটাও আপনারা জানেন। ইনজুরির দিক থেকে একটা জায়গা নিয়ে চিন্তা আছে। এ ছাড়া চেষ্টা থাকবে সেরা দলটাই গড়া। কিছু নতুন প্লেয়ার দলে নেয়া হয়েছে। সামনে বিশ্বকাপ চিন্তা করে তাদের দেখে নেয়ার এটাই সুযোগ। একই সঙ্গে ম্যাচ জেতাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ :

৭০তম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ৬৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে ৪১টি ম্যাচ জিতেছে। বাকি ম্যাচগুলো জিতেছে জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বশেষ দশ ম্যাচের দশটিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও ২০১৫ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করে। আর গত জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইটি ম্যাচ খেলে দুইটিতেই বাংলাদেশ জয় পায়।

নজর থাকবে যাদের দিকে :

বাংলাদেশ দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজরে থাকবেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। চোটের কারণে দলে নেই দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। যার জন্য ওপেনিং ব্যাটসম্যান লিটন কুমারের দিকেই থাকবে বাড়তি নজর। তাছাড়া সদ্য শেষ হওয়া এশিয়া কাপে দারুণ ছন্দে ছিলেন এই ব্যাটসম্যান। এশিয়া কাপ শেষে ঘরোয়া ক্রিকেটেও ছন্দে আছে তার ব্যাট।

বোলিংয়ের দিক থেকে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজের উপরই থাকবে মূল দায়িত্ব। পাশাপাশি অধিনায়ক মাশরাফি তো আছেনই।

জিম্বাবুয়ের হয়ে নজরে থাকবেন হ্যামিলটন মাসাকাজা। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন এই ওপেনার। তাছাড়া দলে ফিরেছেন অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা। এই অলরাউন্ডারের দিকেও থাকছে বাড়তি নজর।

উইকেট কেমন হতে পারে :

শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাভাবিক ভাবে ধীর গতির পিচ আশা করা যায়। দুপুরে আড়াইটায় খেলা শুরু হলে, প্রথম ৯০ মিনিট গরম আবহাওয়া সহ্য করতে হবে। ধীরে ধীরে সন্ধ্যায় স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে।

সম্ভব্য একাদশ :

বাংলাদেশ: রুবেল হোসেন জ¦রে ভুগছেন। তবে প্রথম ম্যাচে ফিট হয়ে ফিরতে পারেন তিনি। উদ্বোধনী জুটিতে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে দেথা যেতে পারে ইমরুল কায়েস অথবা নাজমুল হোসেন শান্তকে। ব্যাটিংয়ের কথা চিন্তা করলে আরিফুলকে দেখা যেতে পারে। আর যদি অলরাউন্ডিংয়ের কথা চিন্তা করা তাহলে তার জায়গা দলে ঢুকতে পারেন নতুন ডাক পাওয়া ফজলে রাব্বি।

একাদশ (সম্ভাব্য): লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইমরুল কায়েস,মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিথুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ফজলে রাব্বি/আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা(অধিনায়ক), রুবেল হোসেন, মোস্তাঢিজুর রহমান।

জিম্বাবুয়ে: ওপেনিংয়ে মাসাকাজার সঙ্গে থাকবেন সলোমান। ছয় বা সাতে সম্বরে দেখা যেতে পারে অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজাকে। আর বোলিং আক্রমণে কাইল জার্ভিস-তেন্ডাইরাতো আছেনই।

একাদশ (সম্ভাব্য): হ্যামিলটন মাসাকাজা, সলোমন মায়ার, ক্রেগ এরভিন, ব্রেন্ডন টেইলর(উইকেট রক্ষক),শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, এলটন চিগুম্বুরা, ওয়েলিংটন মাসাকাজা(অধিনায়ক), ব্র্যান্ডন মাভুতা, কাইল জার্ভিস, তেন্ডাই চেতারা।

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে