বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের ‘ব্যাপক অনিয়ম’ খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে ইসি গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। তদন্তের অংশ হিসেবে মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাসহ তিনদিনে ৬৮৫ জনকে শুনানির আওতায় আনা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ তৃতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে গাইবান্ধা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে এই শুনানি শুরু করেন ইসির অতিরিক্ত সচিব ও গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অশোক কুমার দেবনাথ, সদস্যসচিব ও ইসির যুগ্ম সচিব মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী এবং যুগ্ম সচিব মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস।
তৃতীয় দিনের শুনানিতে ওই নির্বাচনের পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ১৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও র্যাবের দুজন কমান্ডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক অলিউর রহমানসহ ২৭ জন রয়েছেন। সকাল ৯টায় প্রথমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে শুনানি শুরু করা হয়।
এর আগেও গত মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে গাইবান্ধা সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে প্রথম দিনের তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১১টি ভোট কেন্দ্রের ১১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৬৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, ৫৫ জন পোলিং এজেন্ট, গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১৩৬ জনের শুনানি করা হয়।
পরের দিন বুধবার (১৯ অক্টোবর) সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে ৫২২ জন নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের শুনানি সম্পন্ন করা হয়। এরমধ্যে ৪০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২৭৮ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২০০ জন পোলিং এজেন্ট, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। গত দুইদিনে মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ৬৫৮ জনের শুনানি সম্পন্ন করে তদন্ত কমিটি।
গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেন নির্বাচন কমিশন। সিসিটিভি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করে পর্যায়ক্রমে ৫১টি ভোটকেন্দ্রে ভোট বন্ধ ঘোষণা করেন ইসি। পরে ওই উপ-নির্বাচনের ভোট পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে এই শুনানির জন্য আদেশ জারি করে ইসি।
গত ২৩ জুলাই জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসনটি শূন্য হয়। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে এই উপ-নির্বাচনের শেষ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও বিশেষ পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন কমিশন তার বিশেষ ক্ষমতাবলে আরও ৯০ দিনের সময় বাড়িয়েছে। সেই হিসেবে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।