মিয়ানমারে জাতিগত সংখ্যালঘু একটি গোষ্ঠীর কনসার্ট চলাকালে সেনাবাহিনীর চালানো বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ জনে। মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে রোববার (২৩ অক্টোবর) রাতে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় নিহতদের মধ্যে স্থানীয় সংগীত শিল্পীসহ কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির (কেআইএ) কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো দেশটির সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিমানের জ্বালানি বিক্রি না করার আহ্বান জানিয়েছে।
জানা গেছে, রোববার রাতে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের জন্য কনসার্টের আয়োজন করা হয়। সেখানে জড়ো হন শত শত মানুষ। তাদেরকে টার্গেট করেই এ হামলা চালানো হয়। ২০২১ সালে দেশটির সেনাবাহিনী ক্ষমতাগ্রহণের পর এটি সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।
কাচিন শিল্পী সমিতির মুখপাত্র সোমবার এপি সংবাদ সংস্থাকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ৮০ জন নিহত হয়েছেন এবং একশ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনার পরপরই বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে ৬০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তবে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে ওই মুখপাত্র ৮০ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, সামরিক বিমান রোববার সন্ধ্যায় কনসার্ট চলাকালে চারটি বোমা ফেলে, যেখানে সঙ্গীতশিল্পীসহ তিনশ থেকে পাঁচশ জনের মতো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তারা সংগীত শিল্পী, সাধারণ মানুষ, কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির (কেআইএ) কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায়।
তবে দেশটির সুদূর উত্তরে বিমান হামলার প্রকৃত ঘটনা স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। জান্তা সরকারের মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে এ হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সও হামলার খবরের বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করে দেখতে পারেনি। তবে হামলাটি হপাকান্ত শহরের এ নাং পা অঞ্চলে হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আগামী নভেম্বর মাসে কম্বোডিয়ার নমপেন শহরে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের শীর্ষ নেতাদের সম্মেলন হবে। সম্মেলনে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংকে আমন্ত্রণ জানানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রতিবেশী ও পশ্চিমা দেশগুলো জান্তাবিরোধী অবস্থান নিলেও মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তৎপর বলে খবর মিলছে।
সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে মিয়ানমারের অর্থনীতি। রাজনৈতিক সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে দেশটিতে। এ পর্যন্ত দেশটির জনগণের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২০০ মানুষ।
সূত্র: আল-জাজিরা, রয়টার্স