পূর্ব আফ্রিকার দেশ মালাউইতে কলেরার প্রাদুর্ভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ এই প্রাদুর্ভাবে দেশটিতে ২১৪ জন মারা গেছেন। যদিও কলেরার সংক্রমণ গত মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর বর্তমানে তা কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
মালাউইয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার (৯ নভেম্বর) এই তথ্য সামনে আনে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারিদ্র্যপীড়িত আফ্রিকার এই দেশটিতে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ৭ হাজার ৪৯৯ জন কলেরায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। দেশটিতে সংক্রামক এই রোগের ছড়িয়ে পড়াকে গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব বলে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ।
বুধবার মালাউইয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, মঙ্গলবার দেশটিতে নতুন করে ১৭৪ জন কলেরায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত করা হয়। আর গত অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে দিনে কলেরা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২০০-এর বেশি।
আফ্রিকার এই দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিচালক স্টর্ম কাবুলুজি এএফপিকে বলেছেন, ‘এই মহামারি কার্যত সংক্রমণের ঢেউ তৈরি করেছিল এবং পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, অক্টোবরে সংক্রমণ শীর্ষে ওঠার পর এখন তা কমছে। আমরা বেশ কয়েকটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পর এখন এর অবসান নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।’
এদিকে চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, কলেরা সংক্রমণ প্রতিরোধে মালাউইকে ওরাল কলেরা ভ্যাকসিনের ২৯ লাখ ডোজ দেওয়া হয়েছে। মূলত টিকাদান অভিযানকে এগিয়ে নিতে দেশটিকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।
কলেরা মূলত ব্যাকটেরিয়া থেকে সংক্রমিত হয় যা সাধারণত দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এতে কেউ আক্রান্ত হলে ডায়রিয়া ও বমি হয় এবং বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের জন্য এই রোগ বিপজ্জনক হতে পারে।
এএফপি বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর ১০ লাখ ৩০ হাজার থেকে ৪০ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। এছাড়া বিশ্বব্যাপী এই রোগে প্রতি বছর ১ লাখ ৪৩ হাজার পর্যন্ত মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে।