প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন যশোর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএনপির যে কোনো গণসমাবেশের চেয়ে বড় জমায়েত করতে চায় দলটি। যে কারণে পুরো শহরই সমাবেশস্থলে পরিণত করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কয়েক লাখ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্য নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
২৪ নভেম্বর যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর যশোরে আগমনের বার্তায় শুধু যশোর নয়, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে যশোরের সাধারণ মানুষের মধ্যেও নতুন আশা জেগেছে। যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে সাগরদাঁড়িতে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ভবদহের জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনসহ একগুচ্ছ দাবি নিয়ে রাজপথে আছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এসব দাবির বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে ইতিমধ্যে মানববন্ধন, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানের মতো কর্মসূচি পালন করছেন।
জনসভা সামনে রেখে ইতিমধ্যে একাধিকবার স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা ও মন্ত্রী। সমাবেশস্থল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরাও যশোরে অবস্থান করছেন। কয়েক লাখ মানুষের অবস্থান নিশ্চিত করতে শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশের গ্যালারি ভেঙে আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজের মাঠ ও পৌর পার্কের একাংশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
জনসভার প্রস্তুতি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার বলেন, আমার জানামতে, খুলনায় বিএনপির সমাবেশে ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষ হয়েছে। সেখানে যশোরের জনসভায় আট লাখ মানুষের গণজমায়েতের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর যশোরের নেতাকর্মীরা নেত্রীকে কাছে পান না। নেত্রীকে ভালোবেসে নেতাকর্মীরা চোখের দেখা দেখার জন্য বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নিয়ে যশোরের জনসভায় যোগ দেবেন।
শুধু কেশবপুর উপজেলা থেকেই ৮০০টি বাসে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন উল্লেখ করে শাহীন চাকলাদার বলেন, আশপাশের জেলা থেকেও নেতকর্মীরা আসবেন। সমাবেশস্থলে এত মানুষ ধরবে না। মানুষ যাতে সরাসরি নেত্রীর ভাষণ দেখতে ও শুনতে পান, সে জন্য ১০টি বড় আকারের এলইডি স্ক্রিন (বড় পর্দা) স্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজ ক্যাম্পাস ও ঈদগাহ মাঠে ওই বোর্ডগুলো স্থাপন করা হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জনসভা উপলক্ষে এরই মধ্যে মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে। শহরের বিভিন্ন সড়কে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। জনসভা সামনে রেখে এর মধ্যে শহরজুড়ে বিভিন্ন নেতা নিজেদের প্রচারে নেমেছেন। শহরের দড়াটানা মোড়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, গরীবশাহ সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার টাঙিয়েছেন নেতারা।