বাংলাদেশ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিসর, তুরস্ক, পর্তুগাল, ভেনেজুয়েলাসহ ১১৪ দেশের ৪৯৩ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ-২০২২’। চার দশক ধরে এ উৎসবের আয়োজন করে আসছে শিল্পকলা একাডেমি।
দুই বছর পরপর অনুষ্ঠেয় এ আয়োজন করোনার কারণে ২০১৮ সালের পর কয়েক দফা পিছিয়ে এ বছর আবার শুরু হচ্ছে। শিল্পের এ মহাযজ্ঞ ইতিমধ্যে পরিচিতি পেয়েছে এশিয়ার বৃহৎ চারুকলা প্রদর্শনী হিসেবে। প্রদর্শনী চলবে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। শুক্রবার সকাল ১০টায় সেগুনবাগিচার জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে ভার্চ্যুয়ালি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এ বছর প্রদর্শনীতে দেখা যাবে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম। চিত্রকলা, ভাস্কর্য, আলোকচিত্র, স্থাপনাশিল্পসহ নানা মাধ্যমে নির্মিত শিল্পকর্ম নিয়ে যোগ দিচ্ছেন দেশের ১৪৯ এবং বিদেশের ৩৪৪ জন শিল্পী। বাংলাদেশের ৪৫ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে ৩১টি পারফরম্যান্স আর্ট এবং বিদেশি সাত শিল্পীর সাতটি পারফরম্যান্স আর্ট উপস্থাপন করা হবে প্রদর্শনীতে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন ৬৮টি দেশের শিল্পীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে শিল্পকলা একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী বলেন, শিল্পের নানা মাধ্যমের প্রদর্শনীর সঙ্গে এ বিয়েনাল হতে যাচ্ছে ১১৪টি দেশের শিল্পীদের অভূতপূর্ব এক মিলনমেলা। আমরা এ বিয়েনালের কোনো থিম নির্ধারণ করি না। কারণ, প্রত্যেক শিল্পী তার ভেতরে এক শৈল্পিক দর্শন ধারণ করেন, যা তাঁকে পরবর্তী সময়ে শৈল্পিক বুদ্ধিজীবীতে পরিণত করে।
এ বছরও প্রদর্শনীর শিল্পকর্মের ওপর থাকছে পুরস্কার। নয়টি শাখায় পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হবে পাঁচ লাখ টাকা মূল্যমানের তিনটি গ্র্যান্ড এবং তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ছয়টি সম্মানসূচক পুরস্কার। পুরস্কারের বিচারক ছিলেন দেশের বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী, শ্রীলঙ্কার জগৎ ভিরাসিংহে, তুরস্কের নারসেরিন টর, যুক্তরাজ্যের ইয়োনা ব্লাজউইক ও পোল্যান্ডের শিল্পী জ্যারোস্ল সুহান।
সংবাদ সম্মেলনে ইয়োনা ব্লাজউইক বলেন, এ আসরের কাজ বাছাইয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি সাম্প্রতিক বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট। বর্তমান সমাজের চালচিত্র বা প্রতিদিনের ঘটনাগুলো কীভাবে শিল্পীর মনে রেখাপাত করছে, শিল্পকর্মে তা কতোটা উঠে এসেছে, তা জানতে মুখিয়ে ছিলাম আমরা।
এবারও প্রদর্শনী উপলক্ষে থাকবে দেশ-বিদেশের শিল্পী, সমালোচক, বিচারক ও পর্যবেক্ষকদের অংশগ্রহণে সেমিনার। প্রদর্শনী উপলক্ষে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের নিয়ে নৌভ্রমণ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, আর্টক্যাম্প, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করেছে শিল্পকলা একাডেমি।