সৌদি আরবের সাংবাদিক ও কলাম লেখক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা হয়েছিল। ২০২০ সালে সালমানের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করেছিলেন খাশোগির বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিজ। তবে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) এটি খারিজ করে দিয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসির একটি নির্বাহী আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভাগীয় বিচারক জন বাতেস এ রায় দিয়েছেন। যদিও তিনি জানিয়েছেন, প্রিন্স সালমানের বিরুদ্ধে মামলাটি খারিজ করতে চাননি। কিন্তু যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সালমানকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হওয়া থেকে রেহাই’ দিয়েছে, তাই মামলা খারিজ না করা ছাড়া তার অন্য কোনো উপায় ছিল না।
২৫ পাতার রায়ে বিচারক জন বাতেস লিখেছেন, ‘আদালতের আপত্তি সত্ত্বেও, বিন সালমানের সৌদি আরবের নতুন দায়িত্ব পাওয়া (প্রধানমন্ত্রী হওয়া) এবং জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ওই সময় তার জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার আদালতকে জানিয়েছে প্রিন্স সালমানকে বিচারের মুখোমুখি করা যাবে না।’
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এক রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে প্রিন্স সালমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ। মূলত খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিচার থেকে বাঁচতে তাকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টে সৌদির রাজ পরিবারে সমালোচনা করে বিভিন্ন কলাম লিখতেন খাশোগি। ধারণা করা হয়, এ কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন প্রিন্স সালমান। ফলে তাকে হত্যা করতে ছক কষেন তিনি।
এরপর সুযোগ বুঝে ২০১৮ সালে সালমানের সরাসরি নির্দেশে একটি হিট স্কোয়াড তুরস্কে অবস্থিত সৌদি আরবের দূতাবাসে খাশোগিকে হত্যা করে তার মরদেহ গলিয়ে ফেলে।
যদিও সালমান শুরুর দিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে জানান, হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ না দিলেও তার নজরে ছিল এ ঘটনায়।
তুরস্কের নাগরিক হাতিস চেঙ্গিজকে বিয়ে করতে ২০১৮ সালে তুরস্কে এসেছিলেন জামাল খাশোগি। তিনি বিয়ে সংক্রান্ত কাগজপত্র আনতে সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন। সেখানেই নির্মম পরিণতি বরণ করতে হয় তাকে।
সূত্র: রয়টার্স