বৈশ্বিক জ্বালানি ব্যবস্থায় যে কারণে আসবে পরিবর্তন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফাইল ছবি

২০২২ সালের অন্যতম প্রধান সংকট জ্বালানি। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে ইউরোপ। অঞ্চলটিতে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। মূলত এই সংকটের কারণেই একদিকে ত্বরান্বিত হয়েছে মূল্যস্ফীতি অন্যদিকে অর্থনৈতিক মন্দা। বলা হচ্ছে, ২০২৩ সালেও তেল ও গ্যাসের বাজারে অস্থিরতা থাকবে। তবে একটি নতুন জ্বালানি ব্যবস্থা তৈরি করতে বিশ্ব দ্বিগুণ চেষ্টা করবে, যা হবে সস্তা, পরিবেশ সম্মত ও অধিক নিরাপদ।

২০ শতকের জীবাশ্ম-জ্বালানি যুগে অনেক দর কষাকষি দেখা গেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০২৩ সালে অনেক দেশ নতুন পদক্ষেপ নেবে। প্রথমত স্বল্প মেয়াদে নিরাপত্তা নিশ্চিতে জীবাশ্ম-জ্বালানিতে বিনিয়োগ করবে। দ্বিতীয়ত দীর্ঘমেয়াদে তারা নবায়নযোগ্য বিল্ড-আউটকে ত্বরান্বিত করার প্রয়াসে রাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন শিল্প নীতি গ্রহণ করবে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে যে সংকট শুরু হয়েছে তা যন্ত্রণাদায়ক। জ্বালানি সংকটের কারণে দেশে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে আকাশচুম্বী হয়। নিষেধাজ্ঞার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পুতিন ইউরোপে গ্যাস সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন। এতে সেখানের কোম্পানি ও ভোক্তাদের ব্যবহার কমাতে হয় ১০ শতাংশ। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শিল্পায়নের ওপর।

ইউরোপের এমন পরিস্থিতির কারণে চাপ বেড়েছে বিশ্ব বাজারে। তাই বিশ্বজুড়েই জ্বালানির দাম বেড়ে গেছে। ভুক্তভোগী হচ্ছে দরিদ্রদেশগুলো। ক্রুড অয়েলে দাম সর্বোচ্চই থাকছে। অন্যদিকে উৎপাদনও বাড়াবে না ওপেক প্লাস। তাছাড়া কয়লা ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে ফিরে এসেছে।

চলতি বছরের নভেম্বরে স্পট গ্যাসের দাম একটু কমেছিল। এর কারণ ছিল একটু গরম আবহাওয়া ও শিল্প-কারখানার ব্যবহার কমানো। তবুও ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির বাজার অস্থির থাকবে। তাছাড়া ২০২৩ সালে যদি চীনের অর্থনীতি ফের চাঙা হয় তাহলে জ্বালানির দাম আরও বাড়বে। যা আরও চাপে ফেলবে বৈশ্বিক বাজারকে। যদিও এমন পরিস্থিতিতে নতুন জ্বালানি ব্যবস্থা তৈরি হবে। অর্থাৎ জ্বালানি ব্যবস্থায় আসতে পারে পরিবর্তন।

১৯৭৩ সালের সংকটের সময়ও নতুনখাতে বিনিয়োগ বেড়েছিল। যেমন পারমাণবিক ব্যবস্থায়। যদিও এই সময়েও সংকট রয়েছে, তবে সে অনুযায়ী বাড়েনি বিনিয়োগ। ২০২৩ সালে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ জ্বালানি সংস্থার মূলধন ব্যয় প্রাক-মহামারি স্তরের থেকে মাত্র নয় শতাংশ বেশি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সবুজায়নে অনিশ্চয়তা ও ভূ-রাজনীতির কারণে কোম্পানিগুলোতে আশঙ্কা বাড়ছে।

বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারে এখন আর উদার নীতি নেই। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী হওয়ার বিষয়ে দোটানায় পড়েছে। দেশটি নিজেদের ভোক্তা ও ব্যবসার জন্য দাম কম রেখে রপ্তানি সীমিত করতে পারে। অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও চীন রাশিয়া ও ইরানকে সহায়তা করছে। এমন নান সংকটের কারণেই নতুন জ্বালানি ব্যবস্থার প্রেক্ষাপট তৈরি হবে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

শেয়ার করুন