গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. মাহমুদ হাসান রিপন ২৩ হাজার ৭৮৪ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন। তার নিকটবর্তী জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু পেয়েছেন ১২ হাজার ২৯৩ ভোট।
এর আগে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট শুরু হয় সকাল ৮টায়, শেষ হয় বিকাল সাড়ে ৪টায়। ১৪৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে একটানা ভোটগ্রহণ চলে। এবারও কেন্দ্রগুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
এবার নির্বাচনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অন্য প্রার্থীরা হলেন- বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবার রহমান (ট্রাক)।
সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩। দুই উপজেলা মিলে ভোটকেন্দ্র ১৪৫ এবং বুথের সংখ্যা ৯৫২।
ভোট সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে ২১ জন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি র্যাবের ৮টি টিম, ৫ প্ল্যাটুন বিজিবি, বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট, স্ট্রাইকিং ফোর্স, আনসারসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর ইসি কার্যালয়ে বসে সিসি ক্যামেরায় এ আসনের ভোটে অনিয়ম দেখে মাঝপথে নির্বাচন স্থগিত করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। পরে অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের পাঁচ উপপরিদর্শক (এসআই) ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির সিদ্ধান্ত দেয় ইসি।
এ উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মো. মাহমুদ হাসান রিপন এবং লাঙলের প্রার্থী অ্যাডভোকেট এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু ছাড়াও ভোটে লড়ছেন বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। তবে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ গত ২৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে উপনির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাঘাটার ১০ ও ফুলছড়ির সাত ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। সাঘাটায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০ জন এবং ফুলছড়িতে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৩ জনসহ এ আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন। ১৪৫ কেন্দ্রের ৯৫২ বুথে ভোট নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রেগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৪৫ প্রিসাইডিং অফিসার, ৯৫২ সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৯০৪ পোলিং অফিসার। তবে ১২ অক্টোবরের উপনির্বাচনে দায়িত্বরত ১৪৫ প্রিসাইডিং অফিসারকে এবারের ভোটে রাখা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী ২৩ জুলাই মারা যান। নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণার পর ১২ অক্টোবর এই আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটে অনিয়মের অভিযোগে তা বাতিল করা হয়।