ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি উন্মোচন করা হয়েছে। বুধবার ভারতের লৌহমানব খ্যাত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ বা ‘ঐক্যের মূর্তি’ উন্মোচন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও বিরোধীদের প্রবল সমালাচনার মুখে ক্ষরায় বিধ্বস্ত হওয়া গুজরাটের নর্মদা নদীর পাড়ে এই মূর্তি উন্মোচন করা হয়।
মূর্তি উন্মোচনের পর মোদি বলেন, রাষ্ট্রীয় একতা দিবস পালন করছে গোটা দেশ৷ দেশের প্রতিটি কোণে একতার জন্য যুবসমাজ দৌড়চ্ছেন৷ রান ফর ইউনিটি৷ আজকের এই দিনটি দেশের কাছে স্মরণীয় দিন৷ এতদিন সর্দার প্যাটেলকে সেই যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি৷ বর্তমান সরকার সেটা করে দেখিয়েছে এবং নতুন ইতিহাসও তৈরি করেছে৷ ভারত ভবিষ্যতে চলার পথে প্রেরণা পাবে৷ সর্দার প্যাটেলের মূর্তি দেশকে সমর্পণ করে ভালো লাগছে৷
এ সময় আবেগপ্রবণ হয়ে মোদী বলেন, যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখন ভাবিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমি এই মূর্তির উন্মোচন করব৷ পুরানো দিনের কথা মনে পড়ছে৷ দেশজুড়ে কৃষকদের কাছে জমি চাওয়া হয়েছিল৷ ক্ষেত খামারে ব্যবহৃত যন্ত্র চেয়েছিলাম৷ সকলে এগিয়ে এসে একে জনআন্দোলনে পরিণত করেন৷ বহু টন লোহার যন্ত্রে মূর্তির কাঠামো তৈরি হয়৷
তবে এই মূর্তি নির্মাণ নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের। এছাড়া বিরোধী দলগুলোও ব্যয়বহুল এই মূর্তি নির্মাণের সমালোচনা করে এসেছেন শুরু থেকেই।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও আদিবাসীরা এই অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন৷ তাদের প্রতিবাদের কারণ, এই মূর্তি নির্মাণ করতে গিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদের বিপুল ক্ষতি হয়েছে৷ তাছাড়া এই মূর্তি নির্মাণের খরচকে অপচয় বলে কটাক্ষ করেছেন তারা৷ জানিয়েছেন, নুন্যতম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত গ্রামবাসী৷ এখানে না আছে হাসপাতাল না আছে স্কুল ও কলেজ৷ নেই পরিশ্রুত পানিও৷
গুজরাটের নর্মদা জেলাতে অবস্থিত এই মূর্তিটি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মূর্তি। ১৮২ মিটার উচ্চতার এই মূর্তির ওজন ১৭০০ টন, পায়ের উচ্চতা ৮০ ফুট, হাতের উচ্চতা ৭০ ফুট, কাঁধের উচ্চতা ১৪০ ফুট এবং মুখের উচ্চতা ৭০ ফুট। এই মূর্তি নির্মাণ করেছেন বিখ্যাত ভাষ্কর রাম ভি সুতার। মূর্তিটি নর্মদা নদীর উপর সর্দার সরোবর বাঁধ থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।