আ.লীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া সহজ নয়: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিল আর একেবারে পড়ে গেল- এতো সহজ নয়। আজ বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১১ জানুয়ারির গণঅবস্থান কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, একটা কথা বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করে। কেউ যদি ভোট চুরি করে, তাকে ক্ষমতা থেকে হটানো, সেটা আওয়ামী লীগ পারে। এটা আমরা প্রমাণ করেছি বারবার। আমরা গণতন্ত্রের চর্চা নিজের দলে করি, দেশেও গণতন্ত্রের চর্চা করি।

আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় বিএনপি ও তাদের পক্ষে ভাড়াটিয়ারা দেশে-বিদেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটায় বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানুষকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল ১০ ডিসেম্বর নিয়ে। এতো ঢাকঢোল পিটিয়ে ১০ তারিখ চলে গেল গোলাপবাগে। সেটা আর আমি বলতে চাই না। সেখানেই যেতে হলো।

গণতন্ত্র রক্ষার নামে বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের জন্ম তো গণতন্ত্রের জন্য হয়নি। হয়েছে ক্ষমতা দখলকারী, সংবিধান লংঘনকারী সামরিক শাসকের পকেট থেকে। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল গঠন করা হয়েছিল, সেই দল। তারা তো ভাসমান। তাদের বাংলাদেশের প্রতি কেন দরদ থাকবে? এই জন্যই তো তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ খুন করে। মানুষকে পুড়িয়ে তারা আনন্দ পায়।

২০০১ সালে আওয়ামী লীগই একমাত্র শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল বলে উল্লেখ করেন দলটির সভাপতি। তিনি বলেন, এর আগেও হয়নি, পরেও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি। খালেদা জিয়ার অধীনে দুটি নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আর ২০০৭ সালের জানুয়ারির নির্বাচন। দুটি নির্বাচনই তো বাতিল করতে বাধ্য হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোট চুরি করার ফলে তারাই তাদের বিতাড়িত করে। বারবার যারা জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত, বিতাড়িত তারা গণতন্ত্রটা চর্চা করল কবে? তাদের নিজেরই তো গণতন্ত্র নেই। তাদের দলেরই কোনো ঠিকানা নেই।

নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা ও ইভিএম আওয়ামী লীগ চালু করেছে বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন ওঠাতে পারে না। বিএনপিকে জিজ্ঞেস করা হয় সেই নির্বাচনে কয়টা আসন পেয়েছিল। ৩০০ আসনের মধ্যে ৩০টি আসন পেয়েছিল তারা। ওই নির্বাচন নিয়ে তো কোনো প্রশ্ন নেই। এরপর তো আমরা ক্ষমতায় আসার পরে জনগণের কল্যাণে কাজ করে আর্থসামাজিক উন্নতি সাধন করেছি বলেই জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ যে কী ছিল এখনকার ছেলেমেয়েরা সেটা ধারণাই করতে পারবে না। সেটা তারা চিন্তাই করতে পারবে না। এটা তাদের জানা উচিত আওয়ামী লীগ এটা ওয়াদা দিয়েছিল। ওয়াদা দিয়েছিল বলেই সেটা পূরণ করেছে। আওয়ামী লীগ যেটা বলে, সেটা রাখে।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফারজানা ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, তারানা হালিম, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার প্রমুখ।

শেয়ার করুন