ভারতের বাজারে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারেট) দাম আজ ৫৬ হাজার ২৪৫ রুপিতে উঠেছিল। এর আগে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে তা রেকর্ড গড়েছিল ৫৬ হাজার ১৯১ রুপিতে ওঠে। একই সঙ্গে, ২২ ক্যারেট সোনার দামও রেকর্ড গড়েছে দেশটিতে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সোনা ব্যবহৃত হয় ভারতে। বিয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সেখানকার মানুষ সোনার গয়না উপহার দেন। কিন্তু এভাবে দাম বাড়তে থাকায় ক্রেতাদের মাথায় হাত, বিশেষত বিয়ের ভরা মৌসুমে গয়না কিনতে হবে যাদের। ব্যবসায়ীরাও আতঙ্কিত।
ভারতের স্বর্ণশিল্প মহল বলছে, দাম বাড়তে থাকায় দেশটির অনেক ছোট দোকানের অবস্থা সঙিন। বিয়ের কেনাকাটা সারতে আসা সাধারণ ক্রেতারাও বিপাকে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনেকেই পরিকল্পনামতো গয়না কিনতে পারছেন না। কেউ বাজেট কমাচ্ছেন, কেউ আবার পুরোনো গয়না ভাঙছেন। কাউকে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে হালকা গয়না কিনেই। এমন চলতে থাকলে বেশ কিছু ছোট-মাঝারি দোকান বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
মূলত বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়ে যাওয়ায় ভারতেও দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, আমদানির খরচ বাড়ছে। আরেকদিকে ডলারের সাপেক্ষে রুপির দর এখন রেকর্ড পর্যায়ে। এতে ভারতের বাজারে সোনার দর বাড়ছে। সব মিলিয়ে দাম বাড়ছে এ মূল্যবান ধাতুর। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সোনা আমদানির বাড়তি ব্যয় মেটাতে ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারেও চাপ বাড়বে।
বিশ্লেষকদের দাবি, বড়দিন ও বর্ষবরণের ছুটি কাটিয়ে ফেরা বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলো সোনায় বিনিয়োগ করছে। অর্থাৎ চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা এমন বাড়তি থাকলে আগামী দিনে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। অনেকে আবার সংকটকালীন অর্থনীতির কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, কোভিড সংক্রমণ, জ্বালানির চড়া দাম, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নীতি সুদহার বৃদ্ধির জেরে বিশ্বজুড়ে যে মন্দার আশঙ্কা আছে, তার জেরে অনেক কিছুই ঘটছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতি অস্থির হয়ে উঠেছে।
এ অনিশ্চয়তার মধ্যে দর বাড়ে দুটি জিনিসের; একটি হলো মার্কিন ডলার, আরেকটি সোনা। কারণ, মানুষ তখন এ দুটিতেই ভরসা খোঁজে। গত এক বছর ধরে যেভাবে এ দুটি জিনিসের দর বাড়ছে, তাতে সেটাই স্পষ্ট, এ দুটি জিনিসের চাহিদা বাড়ছে।