আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছয়টি সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগের আমলে সবসময় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আশা করছি, এরপর আর কেউ নিবাচন নিযে কোনো কথা তোলার সুযোগ পাবেন না।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে ছয়টি আসনে উপ-নির্বাচন হলো। একটিতে জাতীয় পার্টি জিতেছে। বিএনপির একজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সেখানে ভোটকরে নির্বাচিত হয়ে আজ সংসদে এসেছেন। তাছাড়া একটি আমরা দিয়েছিলাম রাশেদ খান মেননকে, সেখানে জাতীয় পার্টি জিতে এসেছে। হাসানুল হক ইনুকে দিয়েছি বগুড়ায়, সেটা তারা জিতে এসেছে। বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই সিটে নৌকা মার্কা জয়লাভ করেছে।
রংপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে কেউ অভিযোগ করতে পারেনি উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, সেই ইলেকশনে কিন্তু জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে। আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। কাজেই নির্বাচন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু হয়, অবাধ নিরপেক্ষ হয়, সেটা কিন্তু এসব নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আমি আশা করি, এরপরে আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না। কারণ আমরা ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য আমরাই সংগ্রাম করেছি। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।
আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে সরকার পদ্মা সেতু করেছে। এটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। এই একটা সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে। যারা আগে মনে করতেন, বাংলাদেশ কোনো দিন ওঠে দাঁড়াতে পারবে না। পঁচাত্তরের পর যারা এসেছিলেন, তাদের সে প্রচেষ্টাই ছিল। আজকে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের মর্যাদা বেড়েছে। আমরা যে পারি, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।
সবক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবা চালু করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন দলিল-পরচা ঘরে বসে নেওয়া যায়। যে কোনো বিল ঘরে বসে পরিশোধ করা যায়। দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সরকার সব করে যাচ্ছে।
ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে…
সংসদে এদিন ঢাকার বায়দূষণ নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ঢাকা শহর অত্যন্ত ছোট। অনেক জনসংখ্যা। প্রচুর গাড়ি চলাচল করে রাস্তায়। যার কারণে বায়ু ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা যারা বলি ঢাকা খারাপ, বসবাসের উপযোগী না.. তারা তো ঢাকায় বাস করি। ঢাকা থেকে তো কেউ বাইরে যান না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার বাইরে পরিবেশ অনেক পরিশুদ্ধ। কিন্তু তারপরও ঢাকায় তো আমাদের থাকতেই হবে। ঢাকাকে আমরা গালিও দেবো, আবার থাকবো, এটা কেমন কথা? এটা হতে পারে না। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টার অন্ত নেই। ঢাকার অনেক খাল ও ঝিল ছিল। সেগুলো আইয়ুব খান, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া নষ্ট করেছে।
তুরস্ক-সিরিয়ায় সহায়তা যাচ্ছে
ভূমিকম্পে মানবিক বিপর্যয়ে পড়া তুরস্ক ও সিরিয়ায় বাংলাদেশ সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। তবে আমাদের হৃদয়টা অনেক বড়। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনায় সহায়তার জন্য বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল টিম, ওষুধ, শুকনো খাবার পাঠানো হচ্ছে। সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি আমরা।’