পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে মস্কো যাবেন শি জিনপিং

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

শি জিনপিং-পুতিন
শি জিনপিং-পুতিন। ফাইল ছবি

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের এক বছর হতে চলেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল অধিগ্রহণের জন্য কথিত গণভোট করেছে রাশিয়া। তবে এখনো দু’পক্ষের লড়াই চলছে। সেই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাতে সহায়তা করতে চায় চীন। জানা যাচ্ছে, সে উপলক্ষে শিগগির মস্কো সফর করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

বেইজিং ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার থেকে ক্রেমলিনকে বিরত রাখতে রাজি করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিউ স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি (স্টার্ট) পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তিতে রাশিয়ার অংশগ্রহণ স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। ২০১০ সালে ‘দ্য নিউ স্টার্ট’ চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্রের সংখ্যা ও ব্যবহার সীমিত করা হয়। চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনই তা স্থগিত করলো রাশিয়া।

চীন রাশিয়াকে ‘ভয়াবহ’ সামরিক সহায়তা সরবরাহ করার কথা বিবেচনা করছে ৩ দিন আগে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এমনকি চীন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে নিরপেক্ষ হিসেবে কাজ করার প্রস্তাবও দেয় চীন। ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, যে কোনো ‘প্রাণঘাতী’ সমর্থন চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করবে।

শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরের সময়সূচি এখনো নির্ধারণ হয়নি। যদিও তিনি আগামী এপ্রিল বা মে মাসে সফর করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার বর্ষপূর্তি উদযাপন করবে ক্রেমলিন।

এর আগে গত মঙ্গলবার চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই মস্কো সফরে গেছেন।

সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের একজন সিনিয়র ফেলো রাফায়েলো প্যানতুচির সঙ্গে নিরপেক্ষ আলোচক হিসেবে কাজ করার চীনা কর্মকর্তাদের বিবৃত অভিপ্রায়গুলো যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তিনি তাদের ‘অবিশ্বাস্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সোমবার ব্লুমবার্গকে বলেন, চীনকে একটি নিরপেক্ষ পথ বেছে নিতে হবে, এটি দেখাতে হবে দুটি পক্ষের থেকে স্বাধীন। যদিও এটি ‘স্পষ্ট’ এই সংঘাতে একটি পক্ষ বেছে নিয়েছে তারা।

রাশিয়া ইউক্রেন আগ্রাসনের পর শির সঙ্গে তার প্রথম বৈঠকে পুতিন গত সেপ্টেম্বরে স্বীকার করেন যুদ্ধ নিয়ে চীনের ‘প্রশ্ন ও উদ্বেগ’ রয়েছে। অবশ্য ইউক্রেন আগ্রাসনের পরও বেইজিং ও মস্কো একটি কূটনৈতিক ও আর্থিক সম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। চীন তার রাশিয়ার তেলের আমদানি বাড়িয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়গুলোও এড়িয়ে গেছে দেশটি।

চীন ও রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে ঘোষণা করেছিল দুই দেশের বন্ধুত্বের ‘কোনো সীমা নেই।’ এ মাসের শুরুর দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রাশিয়ান বাণিজ্য তথ্য অনুসারে, চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলো মার্কিন নেতৃত্বাধীন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে সহায়তা প্রদান করছে।

শি জিনপিংয়ের পরিকল্পিত সফরের কথা জানা গেলো যখন বাইডেন সম্প্রতি ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আকস্মিক সফর করেন জো বাইডেন।

সূত্র: ফোর্বস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

শেয়ার করুন