বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয় দক্ষিণ এশিয়ায়। করোনা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ায় এই অঞ্চলে বাল্যবিয়ে বেড়েছে বলে দাবি করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক নোয়ালা স্কিনার বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়াতেই সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়। আর এ কারণে মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। আলজাজিরা।
সংস্থাটির দেওয়া তথ্যে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ২৯ কোটি বাল্যবধূ আছে। বৈশ্বিক হিসাবে এখানেই ৪৫ শতাংশ বাল্যবধূর বাস।
বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ১৬টি এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনা ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রকাশিত হয়েছে ইউনিসেফের এই পরিসংখ্যান।
তাতে বলা হয়েছে, ‘এখানকার অনেক বাবা-মা মনে করেন, শিক্ষার চেয়ে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াই ভালো।’ বিবৃতিতে নোয়ালা স্কিনার আরও বলেছেন, ‘বাস্তবতা হলো দক্ষিণ এশিয়াতেই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হলেও এ নিয়ে তেমন মনোপীড়া নেই।’ আরও বলেন, ‘বাল্যবিয়ে মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ করে দেয়, তাদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে এবং তাদের ভবিষ্যৎকে নস্যাৎ করে।’ নেপালে মেয়েদের বিয়ের বয়স ২০ বছর। কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত এবং শ্রীলংকায় ১৮ বছর হলেও আফগানিস্তানে আরও দু’বছর নামিয়ে ১৬ বছর করা হয়েছে। একই অবস্থা পাকিস্তানেও। সিন্ধু প্রদেশ ছাড়া দেশটির বাকি তিন প্রদেশেই (পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া) মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬। শুধু সিন্ধুতে ১৮ বছরের আগে বিয়ে নয়।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, মহামারির সময় পারিবারিক ব্যয় কমিয়ে আনার জন্যও অনেক পিতা-মাতা কিশোরী মেয়েদের বিয়ে দেওয়াকেই প্রাধান্য দিয়েছেন।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক বিজর্ন অ্যান্ডারসন, ‘আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কাজ করতে হবে এবং মেয়েদেরকে শিক্ষার মাধ্যমে ক্ষমতায়নে অংশীদারত্ব জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি মেয়েদের সুদক্ষ করে তুলতে হবে। এই সংকট মোকাবিলায় সব সম্প্রদায়কে সমবেতভাবে কাজ করে যেতে হবে।’