জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টাকারী ৩৭২ অভিবাসী প্রত্যাশীকে আটকে দিয়েছে তিউনিসিয়া। এরমধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশিও রয়েছেন।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আফ্রিকা নিউজ।
সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড রাজধানী তিউনিস থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে অবস্থিত স্ফ্যাক্স উপকূলে অভিযান চালায়। ওই সময় কয়েকটি ছোটো নৌকা ইউরোপের দিকে যেতে দেখেন তারা। তখন স্পিডবোট নিয়ে নৌকাগুলো আটকানো হয়। কয়েকটি নৌকায় এতই মানুষ ছিল যে এগুলো ছোটো ঢেউয়েই উল্টে যেত।
অভিবাসী প্রত্যাশীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা আশা করেছিলেন নৌকায় করে প্রথমে আন্তর্জাতিক জলসীমায় প্রবেশ করবেন। এরপর তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করা হবে এবং ইউরোপে নিয়ে যাওয়া হবে।
তবে তাদের আর আন্তর্জাতিক জলসীমায় যেতে দেওয়া হয়নি। এরবদলে নৌকাগুলো ফিরিয়ে তিউনিসিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়।
যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশি ছাড়াও কিছু সিরিয়ান রয়েছেন। তবে বেশিরভাগই হলেন পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোর নাগরিক।
ভূমধ্যসাগরের দেশ তিউনিসিয়ায় বসবাস করেন পূর্ব আফ্রিকার অসংখ্য মানুষ। কিন্তু কয়েকদিন ধরে তারা দেশটিতের বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাঈদ কয়েকদিন আগে মন্তব্য করেন, আফ্রিকানদের কারণে তিউনিসিয়ার স্থানীয় মানুষ সংকটে পড়েছেন। তার এমন মন্তব্যের পর বৈষম্য চরম আকার ধারণ করে। এরপর থেকেই পূর্ব আফ্রিকার মানুষ তিউনিসিয়া ছাড়ার চেষ্টা শুরু করেন।
এদিকে যাদের উপকূলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে তাদের বেশিরভাগকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের কয়েকজন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এবার না পারলেও আরেকবার সমুদ্রপথে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা চালাবেন তারা।
তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম চার মাসে প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে সমুদ্র যাত্রা থেকে আটকেছে তারা। কেউ যেন অবৈধভাবে সাগরপথে যাত্রা না করতে পারেন সেজন্য তৎপরতাও বৃদ্ধি করেছে বাহিনীটি। তবে তা সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ এ যাত্রা পুরোপুরি বন্ধ করতে পারছে না তারা।
বিষয়টি সামাল দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী ইতালি, মাল্টার সহায়তা চেয়েছে তিউনিসিয়া। মূলত দেশটির কোস্টগার্ডের বেশিরভাগ জাহাজ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় এ অভিযান ব্যহত হচ্ছে।
সূত্র: আফ্রিকানিউজ