সাগরে ট্রলারের মাধ্যমে কক্সবাজারে ভেসে আসা ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামির ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে কক্সবাজার সদরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শ্রীজ্ঞান তঞ্চ্যঙ্গা পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ট্রলার মালিক সামশুল আলম ওরফে সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া আকতার বাদী হয়ে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দূর্জয় বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দূর্জয় বলেন, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর বুধবার থেকে এদের রিমান্ডের নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ঘটনায় এজাহারভুক্ত অপর ২ আসামিসহ জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের পাঁচটি দল মাঠে কাজ করছেন।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া দুই আসামি হলেন- মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি মাতারবাড়ি ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার মুহাম্মদ ইলিয়াছের ছেলে ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল (৪৫) ও হোয়ানক ইউনিয়নের মোহরাকাটা গ্রামের মৃত মকবুল আহমদের ছেলে মামলার ৪ নম্বর আসামি নুরুল করিম ওরফে করিম সিকদার মাঝি (৫৫)। এরা দুজন মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হন।
এজাহারের উল্লেখ থাকা অন্য দুই আসামি হলেন- মাতারবাড়ির আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মাঝি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৩ এপ্রিল ট্রলারের বরফ রাখার কক্ষ থেকে ওই ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে তিনজনের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। কয়েকজনের শরীরে জাল প্যাঁচানো ছিল। একটি লাশের গলা থেকে মাথা ছিল বিচ্ছিন্ন। আরেকটি লাশের হাত বিচ্ছিন্ন পাওয়া গেছে। লাশগুলো ট্রলারের যে কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেই কক্ষের ঢাকনাও পেরেক দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছিল। অথচ ট্রলারের জাল ও ইঞ্জিন রয়ে গেছে। তাই মনে হচ্ছে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত।
গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ট্রলারটি সাগরে ভাসমান থাকা ট্রলারটি কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের কোল্ড স্টোরেজে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
ইতোমধ্যে উদ্ধার হওয়া ছয়জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও মর্গে রয়ে গেছে চারজনের মরদেহ। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এ চারজনের পরিচয়। এরপরই চারজনের লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।