আইপিএলের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি এসেছিল ২০১৩ সালে। এরপর আরও ১০ বছর পেরোলেও সেই রানের রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি। ওই ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ক্রিস গেইল টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। দলীয় সংগ্রহ নিয়ে যান ২৬৩ রানে। অল্পের জন্য তাদের সেই রেকর্ড ধরতে পারেনি লখনৌ সুপার জায়ান্টস। প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব কিংসের মাঠে দাপট দেখিয়ে তারা লক্ষ্য ছুড়ে দেয় ২৫৭ রানের। ম্যাচের ফলও ছিল তাদের পক্ষেই, ফলে স্বাগতিক পাঞ্জাব ৫৬ রানে হেরে গেছে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) দিনের একমাত্র ম্যাচে পাঞ্জাবের মাঠে খেলতে নামে চলমান আইপিএলে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সফল দল লখনৌ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সফরকারী দলের ব্যাটাররা যেন তেতে ওঠেন। পাঞ্জাবের বোলারদের ওপর একে একে তাণ্ডব চালিয়েছেন কাইল মায়ার্স, মার্কাস স্টয়নিস, নিকোলাস পুরানরা।
লখনৌ ব্যাটারদের টনের্ডো ইনিংসে আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫৭ রান ওঠে নির্ধারিত ওভার শেষে। পাঁচ উইকেট হারানো ইনিংসে সর্বোচ্চ দাপট দেখিয়েছেন অজি অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস (৭২)। তবে স্ট্রাইকরেটের দিক থেকে তারচেয়েও এগিয়ে ছিলেন দুই উইন্ডিজ মারকুটে ব্যাটার কাইল মায়ার্স ও নিকোলাস পুরান। আইপিএলের চলমান আসরে এটি কোনো দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
এদিন লখনৌর ব্যাটারদের তাণ্ডব শুরু হয় ইনিংসের শুরু থেকেই। দুই ওপেনার রাহুল ও মায়ার্স মিলে বোলারদের শুরুতেই মনোবল ভাঙার প্রতিযোগিতায় নামেন। তাদের ব্যাটের ঝড়ে ৩.২ ওভারে ৪১ রান তোলে সফরকারীরা। এরপর ৯ বলে ১২ রান করা রাহুলকে ফেরান কাগিসো রাবাদা। তবে সেটি লখনৌকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। কারণ এরপর মায়ার্সের সঙ্গে তাণ্ডবে যোগ দেন ভারতীয় ব্যাটার আয়ুশ বাদোনি। মায়ার্স-বাদোনি দুজনই সমান ২৪টি করে বল মোকাবিলা করেন। মায়ার্স ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৪ রান এবং বাদোনি ৪৩ রানের পথে খেলেন ৩টি করে চার ও ছয়ের বাউন্ডারি।
ইনিংসের বাকি অংশের দখল থাকে পুরান ও স্টয়নিসের হাতে। ৪০ বলে ৭২ রানের ইনিংসে স্টয়নিস ৬টি চার ও ৫টি ছয় হাঁকান। পুরান তারচেয়েও বিধ্বংসী। ১৯ বলে ৪৫ রানের ম্যাচে তিনি ৭টি চার ও একটি ছয়ের বাউন্ডারি খেলেন। পাঞ্জাবের হয়ে রাবাদা সর্বোচ্চ দুটি এবং স্যাম কারান, লিভিংস্টোন ও আরশদীপ সিং একটি করে উইকেট নেন।
লখনৌর রেকর্ড তোলপাড়ের রাতে ম্যাচের ফল তাদের পক্ষে গেলেও খুব একটা খারাপ করেনি প্রীতি জিনতার দল। ১ বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে তারাও পেরিয়েছে ২০০–এর গণ্ডি। তবু হেরেছে ৫৬ রানের বড় ব্যবধানে।
জবাব দিতে নেমে পাঞ্জাবের শুরুটা ভালো হয়নি। মাত্র ৩ রানে অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান আউট হয়ে স্বাগতিক দলটির চাপ আরও বাড়িয়ে দেন। ইনজুরি থেকে ফেরার পর খারাপভাবেই প্রত্যাবর্তন হলো এই বাঁ-হাতি ব্যাটারের। ৩১ রানে দুই উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেছিলেন সিকান্দার রাজা ও দেশীয় ব্যাটার অথর্ভ তাইদে। দুজনের জুটিতে আসে ৭৮ রান। রাজা ২২ বলে ৩৬ করে ফিরলেও, দলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তাইদে ৬৬ রান করেন। তার ৩৬ বলের দুর্দান্ত ইনিংসটিতে ৮টি চার ও ২টি ছয়ের বাউন্ডারি ছিল।
এরপর পাঞ্জাবের বাকি ব্যাটাররা মৃদু ঝড় চালালেও, থিতু হয়ে শেষ পর্যন্ত টেনে নিতে পারেননি কেউই। ফলে এক বল বাকি থাকতেই ২০১ রানে থেমে যায় পাঞ্জাব। লখনৌর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন ইয়াশ ঠাকুর। এছাড়া নাভিন-উল-হক ৩টি, রবি বিষ্ণয় ২টি এবং স্টয়নিস নেন একটি উইকেট।