খোলা চিনির দাম কেজিপ্রতি ১৬ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম নিয়ন্ত্রক মোছা. শামীমা আকতারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এ দাম নির্ধারণ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, বাজারে চিনির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখা, সাধারণ ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনায় বিটিটিসি কর্তৃক প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনির (খোলা) মিলগেটে মূল্য ১১৫ টাকা, পরিবেশকপর্যায়ে ১১৭ টাকা ও খুচরাপর্যায়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া প্যাকেটজাত প্রতি কেজি পরিশোধিত চিনি মিলগেটে ১১৯ টাকা, পরিবেশকপর্যায়ে ১২১ টাকা ও খুচরায় ১২৫ টাকা নির্ধারণ করার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) চিনির মূল্য ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে। এ ক্ষেত্রে গত বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবেদন, গত এপ্রিল মাসের এলসি, ইনবন্ড মূল্য, আউটবন্ড মূল্য ও অপরিশোধিত চিনির আন্তর্জাতিক বাজারদর বিবেচনায় নিয়ে অভিন্ন মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রাপ্ত অ্যানালাইসিস ব্যবসায়ী নেতাদের উপস্থিতিতে অংশীজন সভায় উপস্থাপনও করা হয়। এরপর চিনির দাম নির্ধারণে সুপারিশ করা হয়।
এদিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারণ করে দেওয়া নতুন এ দামের চেয়ে বেশি দামে বাজারে চিনি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের বিষয় বৃহস্পতিবার (১১ মে) বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে অবগত করে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাড়তি দামে চিনি বিক্রি করা হলে আগামী সপ্তাহ থেকেই প্রশাসন অ্যাকশনে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখি। দুদিন হলো দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যদি সেভাবে (নির্ধারিত দামে) বিক্রি না হয়, তাহলে ভোক্তা অধিকার তো আছেই।’
তিনি বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে, আমরা খুব বেশি চাপ দিলে বাজার থকে পণ্য উধাও হয়ে যায়। তখন উভয় সংকটে পড়ে যাই। বৈশ্বিক বাজার বিবেচনায় নিয়ে আমরা তো একটি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছি।’
গত ১৫-২০ দিনে বৈশ্বিক বাজারে চিনির দাম টনপ্রতি ৪৫-৫০ ডলার করে বেড়েছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের ৯৯ শতাংশ চিনি আমদানি করতে হয়। এসব কারণে বিদেশের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা বেশি। বৈশ্বিক দাম বাড়লে আমাদের ওপর প্রভাব পড়বেই। আবার কিছু অসৎ ব্যবসায়ী সুবিধাও নেয়। সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা চিনির একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, গত রমজানে চিনির দাম যৌক্তিকপর্যায়েই ছিল। তেলের দাম যে বৈশ্বিকভাবে বেড়েছে, তা কিন্তু না। ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করা অবস্থায় ছিল। সেই সময় শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। সেই টাকাটা তেলের দামে যুক্ত হওয়ায় দাম বেড়েছে।