রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে ২৩ দিন আগে ৩ বছরের শিশু মো. সিদ্দিককে অপহরণ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা ও গোপালগঞ্জে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে র্যাব-২। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৬ এপ্রিল দুপুরে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় বাসার পাশে শিশু সিদ্দিককে নিয়ে খেলছিল তার আট বছর বয়সী বোন হুমায়রা। তাদের সঙ্গে আরও ছয় থেকে সাতটি শিশু ছিল। এক ব্যক্তি ওই শিশুদের চকলেট খাওয়ান। তারপর কৌশলে তিন বছর বয়সী শিশু সিদ্দিককে নিয়ে পালিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২–এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন খান বলেন, তদন্তে নেমে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হওয়া যায়, অপহরণকারী ব্যক্তির নাম পীযূষ কান্তি পাল (২৯)। পীযূষ ও তার স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল (২৫) গোপালগঞ্জের এক নিঃসন্তান দম্পতির (পল্লব কান্তি বিশ্বাস (৫২) ও বেবী সরকার (৪৬)) কাছে শিশুটিকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। সুজন সুতার (৩২) নামের এক ব্যক্তি এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করেন। শিশু অপহরণ ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব বলছে, পীযূষ কান্তি পাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় স্পা সেন্টারে কাজ করতেন। স্পা সেন্টারে কাজ করার সময় মানব পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন পীযূষ কান্তি। গত বছর মানব পাচারের অভিযোগে বনানী থানায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। এই দম্পতি ফেসবুকে ‘সনাতনী উদ্যোক্তা ফোরাম (এসইউএফ)’ নামে একটি গ্রুপে ‘শিশু দত্তকের’ বিজ্ঞাপন দেন। সেই গ্রুপে সুজন সুতারের সঙ্গে রিদ্ধিতা পালের পরিচয় হয় এবং টাকার বিনিয়মে শিশু দত্তক দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
র্যাব-২–এর অধিনায়ক আনোয়ার হোসেন খান বলেন, পীযূষের স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল নিজের সন্তানের ছবি সুজন সুতারকে পাঠিয়ে বলেন, এই ছেলেকে দত্তক দেওয়া হবে, আপনাদের পছন্দ হয় কি না বলেন। শিশুটিকে রিদ্ধিতার বাসার গৃহকর্মীর সন্তান বলে পরিচয় দেওয়া হয়। ওই গৃহকর্মীকে তার স্বামী ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় শিশুটিকে টাকার বিনিময়ে দত্তক দেওয়া হবে বলেও জানান রিদ্ধিতা।