দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৭ জেলার চরমপন্থি গোষ্ঠীর ৩২৩ সদস্য আত্মসমর্পণ করবেন। আজ রোববার (২১ মে) সিরাজগঞ্জ স্টেডিয়ামে র্যাব-১২ এর তত্ত্বাবধানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন তারা। এসময় তারা দুই শতাধিক অস্ত্র জমা দেবেন। টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, পাবনা, বগুড়া, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুরের এসব চরমপন্থিরা আত্মসমর্পণ করবেন।
র্যাব সদর দপ্তর জানায়, এসব চরমপন্থি দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, সশস্ত্র হামলা, হত্যাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের কারণে তারা দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইলেও গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে পারছিলেন না। এবার তারা আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অপরাধ জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন। চরমপন্থিদের অপরাধ জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে ২০২০ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে র্যাব।
জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অপরাধ দমনে র্যাবের কর্মপরিকল্পনা বহুমাত্রিক। চরমপন্থিদের আত্মসমর্পণ করিয়েই থেমে থাকেনি র্যাব। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সক্রিয় অংশগ্রহণে অপরাধীদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে সর্বদা তৎপর রয়েছে র্যাব অপরাধ দমনে র্যাব শুধু আভিযানিক প্রক্রিয়ায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। র্যাবের গবেষণা ও প্রশিক্ষণের আলোকে সৃষ্টিশীল এবং সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগ তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। যার প্রতিফলন ঘটেছে বিভিন্ন মানবিক ও সৃষ্টিশীল প্রকল্পের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বগুড়া, কুষ্টিয়া, পাবনা, মেহেরপুর, রাজবাড়ী জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বহারা ও চরমপন্থিদের পরিবারের সদস্যদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। তাদের সচ্ছল করতে নানা প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাভাবিক পেশায় পুনর্বাসিত করা হবে। টাঙ্গাইলে ৩০টি সর্বহারা পরিবারের নারী সদস্যদের হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করতে ‘উদয়ের পথে’ নামক পাইলট প্রোগ্রাম চলমান। ভূমিহীনদের স্থায়ী বাসস্থানের জন্য ভূমি বরাদ্দের পরিকল্পনা রয়েছে।
র্যাবের এ মিডিয়া উইং কর্মকর্তা আরও বলেন, বিভিন্ন চরমপন্থি দলের নেতা ও সদস্যদের আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে গরুর খামার, পোল্ট্রি ফার্ম, মাছ চাষের ব্যবস্থা, চায়ের দোকান, ভ্যান-রিকশা, সেলাই মেশিন দেওয়ার মাধ্যমে চরমপন্থি সদস্য ও তাদের পরিবারগুলোকে স্বাভাবিক পেশায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলমান।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়রে জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।