অসুখ ডাকছে মোবাইল

ডেস্ক রিপোর্ট

পা রাস্তায়, হাঁটার বেগ সামান্য কম, ঘাড় নিচু আর চোখ মোবাইল ফোনে। প্রতি দিন রাস্তায় বেরোলে এমন চলার ভঙ্গিমা আমরা প্রায়ই দেখি। শুধু পথেঘাটেই নয়, বাসে-ট্রেনে-ঘরোয়া আড্ডায়-অফিসে সর্বত্রই ঘাড় গুঁজে মোবাইলের কি-প্যাডে টাইপ নয়তো নেট সার্ফ। এটাই এখন জীবনচর্চায় পরিণত হয়েছে। আর তার হাত ধরেই নতুন অসুখ হানা দিচ্ছে ঘরে ঘরে, চিকিৎসাবিজ্ঞান যার নাম দিয়েছে ‘টেক্সট নেক’।

কেমন অসুখ এটি? তা জানার আগে বরং চোখ রাখা যাক ছোট্ট একটা তথ্যে। ঘাড় গুঁজে টেক্সট বা নেট সার্ফ করে যাওয়ার অভ্যাস কতটা বিষ ছড়িয়েছে মানবশরীরে তা নিয়ে ভারতে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। তার রিপোর্ট হাতে আসতেই শঙ্কার মেঘ দেখছেন চিকিৎসকরা। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে নানা বয়সের তিন শতাধিক মানুষের ওপর সমীক্ষা চলে। সমীক্ষায় প্রকাশ, এদের মধ্যে ৮ শতাংশই এই অসুখের শিকার। ৩৫ শতাংশ এই অসুখের কথা জেনেও সচেতন নয়। আর ২১ শতাংশ একেবারে অসুখের দোরগোড়ায় এসে হাজির হয়েছেন।

এই অসুখে মেরুদণ্ড চিরতরে বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, শুধু তাই নয়, ঘাড়-গলার হাড় ও স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে তা চিরতরে ঝুঁকিয়ে দিতেও পারে। নতুন এই অসুখ এত দ্রুত দেশের সব প্রান্তেই কম-বেশি ছড়িয়ে পড়ছে যে, এখনই সাবধান না হলে এই অসুখ পঙ্গুত্বও ডেকে আনবে বলে মত অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ কৌশিক ঘোষের। যদিও তার মতে, এই অসুখের আবিষ্কার পশ্চিমের দেশগুলোতে, আশির দশকে, এ দেশে মোবাইল আসার অনেক আগেই।

কিন্তু মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার, সারাক্ষণ ঘাড় নিচু করে স্ক্রিনের দিকে চোখ, এসব উপসর্গ দেখে এই অভ্যাসের জেরে হওয়া অসুখকে ‘টেক্সট নেক’ নামেই ডাকা হচ্ছে। নামেই মালুম, মোবাইলে সারাক্ষণ টেক্সট করার ‘বাতিক’ এই অসুখের সঙ্গে জুড়ে গেছে। তা হলে উপায়: চিকিৎসকদের মতে, এই অসুখ সারাতে গেলে একটাই উপায়। যে কোনোভাবেই মোবাইল ফোনের ব্যবহারে রাশ টানুন। নইলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এ অসুখ থাবা বসাবে যে কোনো সময়। মাথা হেঁট করে নয়, হাত সামান্য তুলে চোখের সমান্তরালে এনে মোবাইল দেখুন। একটানা ১৫ মিনিটের বেশি মোবাইল ঘাঁটবেন না। নিয়ম মেনে কঠোর হন এই ক্ষেত্রে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে