স্থলভাগ থেকে আর মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের উপকূলে ঝড়টি আছড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর জন্য উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে লক্ষাধিক মানুষকে।
বৃহস্পতিবার সকালে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) জানিয়েছে, গুজরাট উপকূল থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। এটি বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কুচ এবং পাকিস্তানের করাচি উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
অতিপ্রবল এ ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার। ঝড়ে প্রাণহানি মোকাবিলায় এরই মধ্যে গুজরাট উপকূল থেকে অন্তত ৭৪ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আইএমডি বলেছে, ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে গুজরাট উপকূলে বৃষ্টির তীব্রতা বাড়বে। পোরবন্দর, রাজকোট, মরবি, জুনাগড়, সৌরাষ্ট্র এবং উত্তর গুজরাটের অবশিষ্ট জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) ১৮টি, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) ১২টি, রাজ্য সড়ক ও ভবন বিভাগের ১১৫টি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বিভাগের ৩৯৭টি দল উপকূলীয় জেলাগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতের পশ্চিম রেলওয়ে জানিয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ট্রেন পরিচালনার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৭৬টি ট্রেনের সূচি বাতিল করা হয়েছে।
বন্ধ রাখা হয়েছে গুজরাটের সবচেয়ে বিখ্যাত দেবভূমি দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দির এবং গির সোমনাথ জেলার সোমনাথ মন্দির।
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় মোকাবিলায় ভারতের মতো বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রতিবেশী পাকিস্তানও। দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শেরি রেহমান বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বৃহস্পতিবার ঝড়টি সিন্ধ প্রদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। এর জন্য এখন পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে ৬৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের জলবায়ু মন্ত্রী আরও বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ে ঠাট্টা, সুজাওয়াল, বাদিন এবং থারপারকার জেলাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর প্রভাবে ছোট প্লেন চলাচল স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঝড়টি আরও এগিয়ে এলে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলও স্থগিত করা হবে।
প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। মূলত বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে এ অঞ্চলের ১৩টি দেশ। প্যানেল অন ট্রপিকাল সাইক্লোনের কাছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের নামের প্রস্তাবিত তালিকা জমা পড়ে। সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হয় পরবর্তী ঝড়ের নাম।
সূত্র: এনডিটিভি, এএনআই, জিও নিউজ